নতুন কৃষি বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের কৃষকরা। এনডিএ মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন শরিক শিরোমণি অকালি দলের নেত্রী হরসিমরত কউর বাদল। বিল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে হরিয়ানা সরকারের ওপর চাপ বাড়াচ্ছেন জোট সঙ্গী চৌতালাও। সব মিলিয়ে ঘরে-বাইরে বেজায় চাপে পড়েছে মোদী সরকার।
মোদী সরকারের আনা তিনটি বিল হল – ১। ফার্মার্স প্রোডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স বিল ২। ২০২০ ফার্মার্স এগ্রিমেন্ট অন প্রাইস অ্যাসুরেন্স অ্যান্ড ফার্ম সার্ভিস বিল ৩। ২০২০ এসেনসিয়াল কমোডিটিস বিল। এই তিনটি বিল নিয়েই শুরু হয়েছে কৃষক বিক্ষোভ। ফার্মার্স ট্রেড অ্যান্ড কমার্স বিল নিয়ে ক্ষোভ যেমন রয়েছে, তেমনি প্রাইস প্রোটেকশন অ্যান্ড ফার্ম সার্ভিস বিল নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে
কৃষিক্ষেত্রে ফসল বিক্রি এবং কৃষিপণ্যের বাজারে সরকারি নিয়ন্ত্রণ কমাতে অনেক আগেই তিনটি অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল কেন্দ্র৷ সেখানে বেসরকারি সংস্থার জন্য সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কেনার রাস্তা খুলে দেওয়া হয়েছে৷ এর ফলে বেসরকারি সংস্থা চাইলে সরকারি অনুমতি ছাড়াই নিজেদের মতো দামে কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কিনতে পারবে৷ এখান থেকে কৃষকদের মনে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা৷ তাঁরা মনে করছে, বাজার থেকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ উঠে যাবে৷ সরকার ন্যূনতম সমর্থন মূল্যে ফসল কেনা বন্ধ করে দেবে৷
কেন্দ্রের নয়া কৃষি বিল নিয়ে শুরু থেকে বিরোধ জানিয়ে আসছে কিষাণ মজদুর সংঘর্ষ৷ তাদের মতে, ‘যাঁরা বলছেন বিলটি কৃষকদের স্বার্থের জন্য আনা হয়েছে তাঁরা মিথ্যা কথা বলছেন৷ আমরা বেসরকারি পুঁজিপতিদের হাতের পুতুল হয়ে থাকব৷ প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ দয়া করে আমাদের কথা শুনুন৷ দেশের সব কৃষকদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, তারা রাস্তায় নেমে বিলটির বিরোধিতা করুন৷’
কৃষকদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভয় এখন এটাই যে নতুন বিলের জন্য এমএসপি অনুযায়ী তাঁরা ন্যায্য দাম পাবেন না৷ আবার অন্যদিকে কমিশন এজেন্টরাও ভয়ে আছেন, তাঁরা এবার থেকে তাহলে কমিশন আদৌ পাবেন কী না৷ পাঞ্জাব এগ্রিকালচার বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী পঞ্জাবে ১২ লক্ষ কৃষক পরিবার এবং ২৮ হাজার কমিশন এজেন্ট রয়েছেন৷ নতুন এই বিলগুলির জন্য রাজ্য নিজেও ৬ শতাংশ কমিশন হারাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ সবমিলিয়ে নতুন কৃষি বিল নিয়ে বিক্ষোভে উত্তাল দেশের কৃষক মহল৷