সীমান্তে যুদ্ধের আবহ। সাড়ে চার দশক পর ফের চীন সীমান্তে রক্ত ঝরেছে ভারতীয় জওয়ানদের। শহীদ হয়েছেন ২০ জন। একাধিকবার সংঘর্ষ হয়েছে দুই দেশের সেনার মধ্যে। তবে কেন্দ্র এখনও চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক তথা আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করেনি। বরং, চীনে অবস্থিত এশিয়ান ইনফ্রস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে এই যুদ্ধের আবহেও মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়েছে ভারত সরকার। খোদ কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর সংসদে সেকথা স্বীকার করেছেন।
দুই বিজেপি সাংসদের প্রশ্নের জবাবে অনুরাগ ঠাকুর সংসদে জানান, ‘ভারত সরকার পরিকাঠামো খাতে উন্নয়নের জন্য চীনে অবস্থিত এআইআইবি-র সঙ্গে মোট দুটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। প্রায় ৩ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকার প্রথম চুক্তিটি সই করা হয় গত ৮ মে। যেটা কিনা করোনা মোকাবিলায় এবং চিকিৎসাখাতে ব্যয় করা হয়েছে।’ অনুরাগ জানান, দ্বিতীয় ঋণ চুক্তিটি সই করা হয়েছে ১৯ জুন। সেটি প্রায় ৫ হাজার ৫১৪ কোটি টাকার চুক্তি। অর্থাৎ দ্বিতীয় ঋণটি ভারত সরকার ১৫ জুন সীমান্তের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরে নিয়েছে। বিরোধীদের দাবি, চীনে অবস্থিত ব্যাঙ্কটির থেকে আর্থিক সুবিধা পেয়েছে বলেই ভারত সরকার চীনের বিরুদ্ধে নরম।
যদিও সরকার পক্ষ বলছে, এশিয়ান ইনফ্রস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক মূলত একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। এই ব্যাঙ্কটি মূলত এশিয়া প্যাসিফিক এলাকায় বিভিন্ন দেশের আর্থিক এবং সামাজিক পরিকাঠামো উন্নয়নে কাজ করে। এর স্থায়ী সদস্য সংখ্যা ৭৮, আরও ২৪ জন অস্থায়ী সদস্য দেশ আছে। ভারত এই ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ব্যাঙ্কটির সদর দপ্তর বেজিংয়ে। সেই সুবাদে এর নিয়ন্ত্রণও মূলত চীনের হাতেই। এআইআইবি চিনের মালিকানাধীন না হলেও এর গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্ত নির্ভর করে চীনেরই উপর। আর বর্তমানে চীন আর ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে। পূর্ব লাদাখে দুই দেশের মধ্যে রীতিমতো যুদ্ধের আবহ। কিন্তু এসবের মধ্যেও এই তথাকথিত চীনা ব্যাঙ্কটির থেকেই ৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ফেলেছে কেন্দ্র।