বাবা পুলিশকর্মী। চেয়েছিলেন মেয়ে আইপিএস অফিসার হবে। কিন্তু বাবার সেই ইচ্ছে মেয়ের মানসিক চাপের কারণ হয়ে উঠেছিল। চাপ নিতে না পেরে মঙ্গলবার দুপুরে ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ১৩ বছরের এক কিশোরী। আমহার্স্ট স্ট্রিটের পুলিশ আবাসনে থাকা কিশোরী অদ্রিজা মণ্ডলের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নেমে এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা। কিশোরীর সুইসাইড নোটেও মিলেছে একই ইঙ্গিত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তকারীরা সাদা কাগজে কালো কালিতে হাতে লেখা একটি চিরকুট পেয়েছেন। তলায় অদ্রিজার স্বাক্ষর। ইংরেজিতে লেখা ওই চিরকুটকে সুইসাইড নোট বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। সেখানে ওই কিশোরী অবসাদে মৃত্যুর কথা লিখেছে। ‘হাই এভরিওয়ান’ সম্বোধনে শুরু সেই চিরকুটে লেখা, ‘‘এই চিঠি যখন তোমাদের কাছে পৌঁছবে তখন আমি মৃত। আমি তোমাদের সবাইকে ভালবাসি। আমার মৃত্যুর কারণ অবসাদ। খুব চেষ্টা করেও আমার পরীক্ষার ফল ভাল হয়নি। আমার খুব আনন্দ হচ্ছে এটা ভেবে যে, আমি মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। মানে আমি মৃত। তবে সবচেয়ে দুঃখের বিষয়, আমি আইপিএস হতে পারব না। আমি আমার সিদ্ধান্তের জন্য দুঃখিত। সকলকে ধন্যবাদ। বিদায়।”
আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা চত্বরের পুলিশ আবাসনের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এ দিন দুপুরে তাঁরা উপর থেকে ভারী কিছু পড়ার আওয়াজ শুনতে পান। বাইরে বেরিয়ে দেখা যায়, ১০ তলা আবাসনের নীচে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ওই আবাসনেরই বাসিন্দা অদ্রিজা মণ্ডল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ১৩ বছরের অদ্রিজা কলকাতার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। তার বাবা কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্টান্ট সাব ইনস্পেক্টর। লালবাজারের কম্পিউটার সেলে কর্মরত। খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছন তিনি। ঘটনার তদন্তে নামে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, অদ্রিজা মানসিক অবসাদে ভুগছিল।