যোগী রাজ্যে নারীসুরক্ষার হাল যে ক্রমশই আরও খারাপ হচ্ছে প্রতিদিন, বারবারই মিলছে তাঁর প্রমাণ। কখনও উন্নাওয়ের আসিফা-কাণ্ড বা বিজেপি বিধায়কের বাড়ি চাকরি চাইতে যাওয়া কিশোরীকে নিগ্রহ, তো কখনও আবার তরুণীকে গণধর্ষণ বা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাতে আইনের ছাত্রীর শ্লীলতাহানী-ধর্ষণ — এমনই নানা ঘটনার জেরে বারবারই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে উত্তরপ্রদেশ। এই করোনা পর্বেও বজায় রয়েছে সেই ধারা। এবার যোগীশাসনে বর্বরদের যৌন লালসার হাত থেকে নিস্তার পেল না বছর পনেরোর এক কিশোরী। পুলিশ জানিয়েছে, ওই কিশোরীর ওপর নৃশংস নির্যাতন চালায় পাঁচ জন। গণধর্ষণের সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেয় অভিযুক্তরা। ঘটনা সামনে আসতেই তড়ঘড়ি ইন্টারনেট থেকে সেই ভিডিও মুছে দেওয়া হয়।
ঘটনা এক সপ্তাহ আগেকার। সিতাপুরের বাসিন্দা ওই কিশোরীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে অভিযুক্তরা। ঘটনার ভিডিও তুলে রাখে তারা। পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতিতার উপরে অকথ্য অত্যাচার চালানো হয়েছে। তাঁকে মারধরও করা হয়। প্রাণের হমকি দেওয়া হয়েছে। সিতাপুরের পুলিশ সুপার রাকেশ প্রকাশ সিং জানিয়েছেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর সুলতানপুরের ইমালিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নির্যাতিতার পরিবার ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্তরা ক্রমাগত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে এমন অভিযোগও করেছে মেয়েটির পরিবারের লোকজন। লজ্জা ও আতঙ্কের কারণে মেয়েটি প্রথমে বাড়িতে কিছু বলেনি। পরে ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় এই খবর প্রকাশ্যে চলে আসে। ইতিমধ্যেই ইন্টারনেট থেকে ওই ভিডিও তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সাম্প্রতিক কালে উত্তরপ্রদেশে একাধিক ধর্ষণ-খুনের ঘটনা ঘটেছে। যার জেরে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বিরোধীদের অভিযোগ, যোগীশাসনে উত্তরপ্রদেশে জঙ্গলরাজ কায়েম হয়েছে। মেয়েরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। হেনস্থার ভয়ে বাড়ির বাইরে বেরোনের সাহস পাচ্ছে না। ধর্ষক, খুনি, অপহরণকারীদের কেন দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে লক্ষিমপুর খেরির ঘটনা যোগীকে সবথেকে বেশি অস্বস্তিতে ফেলে। খেরিতে বছর তেরোর এক নাবালিকাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। ঘটনার পরদিন আখখেত থেকে ওই কিশোরীর বিকৃত দেহ উদ্ধার হয়। মেয়েটির বাবা দাবি করেন, ধর্ষকরা তাঁর মেয়ের চোখ উপড়ে নেয়। জিভও কেটে ফেলেছিল।