সমকামিতা কোনও অপরাধ নয়- ২ বছর আগে আগস্ট মাসে এমনই এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। মনে করা হয়েছিল, এরপর সমলিঙ্গে বিবাহও আইনি স্বীকৃতি পাবে। কিন্তু সেই সমলিঙ্গে বিবাহকেই এবার আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার বিরোধিতা করল খোদ কেন্দ্রীয় সরকার। বরং নিজের ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা দাবি করলেন, সমলিঙ্গে বিবাহ শুধুমাত্র বিধিবদ্ধ নিয়মের পরিপন্থী নয়, সেই ধরনের বিবাহকে স্বীকৃতি দেয় না সমাজ ও মূল্যবোধ।
দিল্লী হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি এন প্যাটেল এবং বিচারপতি প্রতীক জালানের ডিভিশন বেঞ্চে সলিসিটর জেনারেল বলেন, “আমাদের সমাজে ইতিমধ্যে যে নিয়ম আছে, তা এই ধরনের বিবাহের পরিপন্থী। আমাদের মূল্যবোধ দু’জন একই লিঙ্গের মানুষের মধ্যে এমন বিবাহকে স্বীকৃতি দেয় না। যা (বিবাহ) পবিত্র।” যদিও সলিসিটর জেনারেল স্পষ্ট করে দেন যে, সেটা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত মতামত।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৫ সালের হিন্দু বিবাহ আইনের আওতায় সমলিঙ্গ মানুষের মধ্যে বিবাহের আর্জি জানিয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর দিল্লী হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেছিলেন চারজন। সেই আর্জিতে জানানো হয়, এই ধরনের বিবাহের ক্ষেত্রে বাধা থাকার ফলে তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। মেহতা দাবি করেন, আইনেও সমকামী বিবাহের কোনও নিয়ম নেই। আর সুপ্রিম কোর্ট শুধুমাত্র সমকামিতাকে অপরাধ নয় বলে রায় দিয়েছে, আর কিছু নয়। তিনি বলেন, “এটা সাংবিধানিক মূল্যবোধের সঙ্গে খাপ খায় না।”
সেই সওয়ালের জবাবে বিচারপতি প্রতীক জালান বলেন, বিশ্বের সর্বত্র পরিবর্তন হয়েছে। বিদেশে যখন দু’জন পুরুষ বিয়ে করেন, তখন তাঁদের কেউ স্ত্রী হিসেবে বিবেচিত হন না। আর্জির সবদিক খতিয়ে দেখতে বলে হবে জানান বিচারপতি জালান। এরপর আবেদনকারীদের আইনজীবী রাঘব আওয়াস্তি জানান, শুধু দু’জন হিন্দুর মধ্যে বিবাহ হবে কিনা, তা হিন্দু বিবাহ আইনের কোথাও বলা নেই। তাই সমলিঙ্গে বিবাহের ক্ষেত্রেও কোনও আইনি বাধা নেই বলে দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি জানান, হিন্দু বিবাহ আইনের আওতায় যে সুবিধা আছে, তা পান না সমলিঙ্গে বিবাহ করা মানুষরা।