রাজ্যগুলোর নগদ প্রয়োজন, তাই দ্রুত জিএসটি বকেয়া মিটিয়ে দিন। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই আর্জি জানালেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। জিএসটি ঘাটতি মেটাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যগুলোকে কেন্দ্রের ‘লেটার অফ কমফর্ট’ দেওয়ার প্রস্তাবকে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ‘সান্ত্বনা বাক্য’ এবং ‘কাগজের টুকরো’ আখ্যা দিয়েছেন।
চিদম্বরমের মতে, যখন টাকার প্রয়োজন, তখন লেটার অফ কমফর্ট’-এর মতো সান্ত্বনা চিঠির কোনও মূল্য নেই। তিনি বলেছেন, ‘রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়া টাকার প্রয়োজন মেটাতে পারে একমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারই। তাদের হাতে একাধিক বিকল্প রয়েছে। একমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারই অর্থের জোগান বাড়িয়ে জিএসটি ঘাটতি পূরণ করতে পারে। কিন্তু, তারা তা করছে না। দায় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে রাজ্যগুলোর ওপর।’ প্রবীণ কংগ্রেস নেতার কথায়, ‘রাজ্যগুলিকে যদি ঋণ নিতে বাধ্য করা হয়, তাহলে রাজ্যের মূলধনী ব্যয়ের ওপর কুঠারাঘাত হতে বাধ্য। এমনিতেই রাজ্যগুলো ক্ষতির শিকার হয়েছে।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে জিএসটি বাবদ বকেয়া পাওনা টাকা মিটিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘করোনার আবহে জিএসটি আদায় কমেছে। এই সময়ে ঘাটতির টাকা কেন্দ্রীয় সরকার দিতে পারবে না বলে জানিয়ে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছে।’ এই প্রসঙ্গে প্রয়াত প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘২০১৩ সালে অরুণ জেটলি বলেছিলেন, তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলিকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিশ্বাস রাখতে বলেছিলেন। বর্তমান সরকার সেই বিশ্বাস ভঙ্গ করছে।’
পাঞ্জাব, ছত্তিশগড় ও তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলোও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। এই বিষয়ে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী কে পালানিস্বামী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে বলেছেন, ‘রাজ্যের বকেয়া টাকা মেটানোর আইনি ও নৈতিক দায় কোনও ভাবেই অস্বীকার করতে পারে না কেন্দ্রীয় সরকার। তাই অবিলম্বে পুরো টাকা মিটিয়ে দেওয়া হোক।’ এবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সুরেই প্রাপ্য জিএসটি-র বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেন চিদম্বরমও।