একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় ৫০ শতাংশ ভোট পাওয়ার লক্ষ্যেমাত্রা স্থির করতে বৃহস্পতিবার রাজ্য বিজেপির ভার্চুয়াল ‘কার্যকারিণী সভা’য় যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা। সেখানে রাজ্যের প্রতিটি বুথে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চালু করার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ করেছেন তিনি। তৃণমূলের তরফে প্রতিটি অভিযোগের জবাব দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতকালের সভা থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নাড্ডা সংখ্যালঘু তোষণ ও ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির অভিযোগ তোলেন। এছাড়া বিজেপি সভাপতি কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও বাংলার সাড়ে ৪ কোটির বেশি গরিব মানুষকে স্বাস্থ্য প্রকল্প থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। এছাড়াও রেশন ও কৃষকদের প্রকল্পে অব্যবস্থার অভিযোগ তোলেন তিনি। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাকে নতুন এইমস উপহার দিয়েছেন।
বিজেপি সভাপতির অভিযোগের জবাবে তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, নাড্ডার ভাষণ ভুল তথ্যে ভরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে এইমসের জন্য চিঠি লিখেছিলেন। জমি জটিলতার কারণে রায়গঞ্জের বদলে কল্যাণীতে এইমস তৈরির পরামর্শ দিয়েছিলেন। কল্যাণীতে এইমস তৈরির জন্য রাজ্য সরকার ১৮০ একর জমি বিনামূল্যে দিয়েছে। রাজ্য সরকার ৩৪ নং জাতীয় সড়ক থেকে এইমসে যাওয়ার চার লেনের রাস্তা তৈরি করছে ৪১ কোটি ব্যয়ে। ১১ কোটি ব্যয়ে স্থায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করছে। পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা করতে ১১৬ কোটি ব্যয় করেছে।
এখানেই শেষ নয়। এর পাশাপাশি, রেশন নিয়ে নাড্ডার অভিযোগ উড়িয়ে ডেরেক দাবি করেছেন, প্রায় ১০ কোটি মানুষকে খাদ্যসাথী প্রকল্পে রাজ্য সরকার ২ টাকা কেজিতে রেশন দিচ্ছে। ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হবে। স্বাস্থ্যবিমা প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের দু’বছর আগেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু হয় বাংলায়। এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষ। জুন থেকে আগস্ট, এই তিন মাসে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের ১২ লক্ষ কৃষককে কিসান ক্রেডিট কার্ড দিয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, নাড্ডা রাজ্যের নেতা-কর্মীদের বলেছেন, বাংলার শাসক দলকে পরাস্ত করতে রাজ্যের প্রতিটি বুথে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে তার মাধ্যমে বিজেপি নেতাদের সরাসরি বুথ স্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। পনেরো দিন অন্তর নতুন নতুন কনটেন্ট তৈরি করে প্রচার করতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে অভিজ্ঞ মহল রীতিমতো সন্দিহান। বহু ক্ষেত্রেই ভুয়ো খবর ছড়িয়ে সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা হয়েছে। সাম্প্রতিক উদাহরণ, দুর্গাপুজো নিয়ে ভুয়ো পোস্ট। বিজেপি আইটি সেল সম্পর্কে বীতশ্রদ্ধ দলের সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীও। তিনি অমিত মালব্যর অপসারণ দাবি করেছেন।