দীর্ঘ সাত বছর পর ফের যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠলেন এক ভারতীয় টেনিস খেলোয়াড়। ২০১৩-তে দ্বিতীয় রাউন্ডে পৌঁছেছিলেন সোমদেব দেববর্মন। মঙ্গলবার ফ্লাশিং মেডোজে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটালেন আর এক ভারতীয় সুমিত নাগাল। প্রথম রাউন্ডে ব্র্যাডলি ক্লানকে ৬-১, ৬-৩, ৩-৬, ৬-১ সেটে হারিয়ে দিলেন সুমিত। তবে দ্বিতীয় রাউন্ডে কাজ অনেক কঠিন। খেলতে হবে বিশ্বের তিন নম্বর তারকা দমিনিক থিমের বিরুদ্ধে। সুমিত বলেছেন, ‘‘২০১৩-তে আমি জুনিয়র স্ল্যামে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিলাম। পরে পুরুষ বিভাগের মূলপর্বে খেলার সুযোগ পাই। আর এবার তো প্রথম রাউন্ডে জয়ও পেলাম। এই জয়ের মূল্য আমার কাছে বিরাট। তা ছাড়া এখানে খেলতে আমার খুবই ভাল লাগে। ’’
ক্লানের বিরুদ্ধে জয় প্রসঙ্গে সুমিত বলেছেন, ‘‘জানতাম এই ম্যাচটায় আমিই এগিয়ে থেকে খেলতে নামছি। এসব ক্ষেত্রে কিন্তু কাজটা আরও কঠিন হয়ে যায়। অবশ্যই আমি স্নায়ুর চাপে ভুগছিলাম। বিশেষ করে জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের লক্ষ্যে খেলছি বলে। তবে আমার যা যা করার দরকার ছিল তার সবই করতে পেরেছি। নিজেকে শান্তও রাখতে পেরেছি।’’ সুমিত মনে করেন, তাঁর আগেও ভারতীয়দের মধ্যে কেউ কেউ গ্র্যান্ড স্ল্যামে সফল হতেই পারতেন। এবং সেটা না হওয়ার জন্য ভারতীয় টেনিসের পরিকাঠামোকেই তিনি দায়ী করেছেন।
সুমিত মনে করেন, ভারতে টেনিসের যা পরিকাঠামো তা একজন খেলোয়াড়ের পক্ষে দারুণ সুবিধেজনক কিছু নয়। তাঁর বিশ্লেষণ, ‘‘আমি নিজে গ্র্যান্ড স্ল্যামে এই সাফল্যটা পেয়ে খুবই খুশি। পাশাপাশি, এটাও ঘটনা যে, অতীতে আমাদের আরও অনেকেরই ভাল ফল হতে পারত। ভারতে এখন অনেকেই টেনিস খেলে। অথচ কখনও-কখনও যোগ্যতা অর্জন করলেও প্রথম রাউন্ডের পরে আর কেউ যেতে পারে না। তার কারণ আমাদের দারুণ সব প্রতিভা থাকলেও, ভাল পরিকাঠামো নেই। যা ভাবলে ভীষণই খারাপ লাগে।’’
এদিকে, পরের রাউন্ডেই থিমের মতো কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে খেলতে হবে বলে আদৌ ভয় পাচ্ছেন না সুমিত। তাঁর কথায়, ‘‘আমি পুরোপুরি তৈরি। এত ভাল একজন খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে নামছি ভেবে উত্তেজিতও। তা ছাড়া এটা একটা চোখ খুলে দেওয়ার মতো অভিজ্ঞতাও হতে যাচ্ছে। মনে হয়, এই ম্যাচেই পরিষ্কার হয়ে যাবে, আন্তর্জাতিক টেনিসে আমি ঠিক কোন জায়গায় আছি।’’ ফ্লাশিং মেডোজের কোর্ট নিয়ে তাঁর বিশ্লেষণ, ‘‘এখানকার কোর্টে বল বেশ লাফাচ্ছে। আমার তো ভালই লাগছে। মনে হয় গত বারের থেকে এ বার একটু বেশি দ্রুত বল যাচ্ছে।’’