মহামারী আবহে বকেয়া পড়েছে রাজ্যগুলির জিএসটি বাবদ ক্ষতিপূরণ। তা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য বারবার আবেদন নিবেদন করেও লাভ হয়নি। এবার সোজাসুজি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো বজায় রাখার আবেদন জানালেন তিনি।
করোনার আগে থেকেই দেশের অর্থনীতি ধুঁকছিল। এরপর মহামারীর জেরে একপ্রকার কোমর ভেঙে গিয়েছে দেশের অর্থব্যবস্থার। অধিকাংশ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকার ফলে রাজকোষেও টান পড়ছে। ২০১৯-২০ আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে (এপ্রিল থেকে জুন) যেখানে ৩.১৪ লক্ষ কোটি টাকা জিএসটি আদায় হয়েছিল, সেখানে এবছর হয়েছে মাত্র ১.৮৫ লক্ষ কোটি টাকা। জিএসটি আদায়ের হার প্রায় অর্ধেক হয়ে যাওয়ায় বিপদে পড়েছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রাপ্য মিটিয়ে সরকারের দৈনন্দিন খরচ চালানো একপ্রকার অসম্ভব বলেই ধরে নিচ্ছিলেন অর্থনীতিবিদরা। সেই আশঙ্কা সত্যি করেই রাজ্যগুলিকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। এরপরই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মমতা।
চিঠিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘জিএসটি নিয়ে যে সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে তাতে আমি গভীর ভাবে ব্যথিত। এটি ভারত সরকারের নৈতিক প্রতিশ্রুতিভঙ্গের সামিল। এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোরও পরিপন্থী।’ এ প্রসঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০১৩ সালে অরুণ জেটলি বলেছিলেন, তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলিকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেবে না বলে জিএসটি রূপায়ণের বিরোধিতা করছি। ১৪ মার্চ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, জিএসটি ক্ষতিপূরণ দিতে বদ্ধপরিকর কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এখন নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে পারছে না বিজেপি।’
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘জিএসটি ক্ষতিপূরণ না পেলে রাজ্যগুলিকে কোটি কোটি টাকা ধার করতে হবে। তাতে রাজ্যগুলির অবস্থা আরও করুণ হবে।’ এ বিষয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, ‘কেন্দ্রীয় সরকার ঋণ নিলে কম সুদ দিতে হয়। তাই কেন্দ্রের উচিৎ টাকা ধার করে রাজ্যগুলিকে দেওয়া।’ প্রসঙ্গত, জিএসটি বাবদ ক্ষতিপূরণ দিতে না পারায় রাজ্য সরকারগুলিকে বাড়তি ঋণ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু কেন্দ্রের সেই প্রস্তাব মানতে নারাজ বহু রাজ্যই।