মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বেসরকারিকরণ হয়েছিল আগেই। বিমানবন্দর বেসরকারিকরণের পর দায়িত্ব পায় জিভিকে গোষ্ঠী। কিন্তু সম্প্রতি জিভিকে গ্রুপের থেকে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের ৫০.৫ শতাংশ শেয়ার কিনেছে আদানি গোষ্ঠী। আর তারপরেই বিমানবন্দর পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত জিভিকে গোষ্ঠীকে আইনি নোটিস পাঠালো বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কনসর্টিয়াম। চিঠির কপি পাঠানো হয়েছে ঋণপ্রদানকারী ব্যাঙ্কগুলোর শীর্ষকর্তাদের। ইংরেজি দৈনিক দ্য ইকনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে এমনই দাবি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতবছর অক্টোবর মাসে ঋণগ্রস্ত সংস্থা জিভিকে তার জিভিকে এয়ারপোর্ট হোল্ডিং-এর ৭৯ শতাংশ শেয়ার বেচে দেয়। কনসর্টিয়াম গড়ে ৭৬১৪ কোটি টাকা অর্থ বিনিয়োগ করে আবুধাবি ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি, কানাডার পাবলিক সেক্টর পেনশন এবং ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড। এবার এই কনসর্টিয়ামই আইনি নোটিস পাঠাল জিভিকে গোষ্ঠীকে। নোটিসে বলা হয়েছে, মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আদানি গোষ্ঠীকে বিক্রি করে দেওয়া হলে তা হবে চুক্তিভঙ্গের সামিল। হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে আগেই প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এবার আইনি নোটিস গেল জিভিকে গোষ্ঠীর কাছে।
জিভিকে গোষ্ঠীর জিভি সঞ্জয় রেড্ডি ছাড়াও এসবিআই চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার, এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান দীপক পারেখ, গোল্ডম্যান স্যাকস ইন্ডিয়ার শীর্ষকর্তা প্রমুখকে চিঠি দিয়ে বিনিয়োগকারী কনসর্টিয়ামের দাবি, আদানি গোষ্ঠীকে মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিক্রির সিদ্ধান্ত চুক্তিভঙ্গের সামিল। এই গোটা বিষয়ে তারা একটি স্বচ্ছ সমাধান চেয়েছে। চিঠিতে বিদেশি সংস্থাগুলির দাবি, ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এক্সক্লুসিভিটি চুক্তি রয়েছে তাদের। অর্থাৎ, এর মধ্যে অন্য কোনও সংস্থাকে শেয়ার কিনতে অগ্রাধিকার দেবে না জিভিকে। তার পরেও আদানি গোষ্ঠীকে স্টেক বিক্রির ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে কেন, প্রশ্ন তুলেছে তারা।
উল্লেখ্য, মোদী ঘনিষ্ঠ গৌতম আদানির গ্রুপ এর আগে ছ’টি নন মেট্রো এয়ারপোর্টে পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিল। আদানি এন্টারপ্রাইজেস তার অ্যানুয়াল রিপোর্টে বলেছিল, তারা দেশের সর্ববৃহৎ এয়ারপোর্ট ডেভলপার হতে চায়। সেজন্য তারা বিমান বন্দরে পরিকাঠামোর উন্নতি করবে। যাত্রীদের জন্য তৈরি করবে এয়ারপোর্ট ভিলেজ, হোটেল এবং মল। এভার জিভিকের থেকে ৫০.৫ শতাংশ এবং এয়ারপোর্টস কোম্পানি সাউথ এশিয়া এবং বিডভেস্ট গ্রুপের থেকে ২৩.৫ শতাংশ শেয়ার কেনায় মুম্বই বিমান বন্দরের প্রায় ৭৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক হল আদানি গ্রুপ। কিছুদিন আগে শোনা যায়, বিমান বন্দরের রক্ষণাবেক্ষণের কাজে সহায়তা করার জন্য আদানি গ্রুপ জার্মানির ফ্লুগাফেন মুনচেন নামে এক সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছে। দুই সংস্থার চুক্তির নানা শর্তও স্থির হয়ে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।