গত বুধবারই জেইই-নিট ইস্যুতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কংগ্রেসের সোনিয়া গান্ধীর ডাকা অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিয়ে নিজের বিরোধিতার কথা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এবার সরাসরি জয়েন্ট ও নিট পরীক্ষা স্থগিত করার আবেদন জানিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ককে চিঠি লিখলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। জানালেন, এই করোনা সংক্রমণের মধ্যে এত বড় পরীক্ষা সারা দেশের জন্য ঝুঁকি।তিনি এ কথাও উল্লেখ করেন যে, রাজ্যগুলিতে এখনও গণপরিবহণ চলছে না। ফলে পরীক্ষার্থীদের চলাফেরার একটা বড় সমস্যা তৈরি হতে পারে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে, সে চিঠির কপি টুইটারে আপলোডও করেন হেমন্ত সোরেন। তিনি লিখেছেন, ‘প্রতিটি পরীক্ষার্থীর জীবনে এ দুটি খুব গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা, তাঁরা এই পরীক্ষায় সবচেয়ে ভাল করার চেষ্টা করেন। তাই এটা খুবই জরুরি, যে পরীক্ষার্থীরা যেন নিরাপদ ভাবে, সুস্থ ভাবে, মানসিক শান্তির সঙ্গে এই পরীক্ষা দিতে পারে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ এখন এক বিশাল মহামারীর সঙ্গে লড়াই করছে। কোভিড ১৯ লক্ষ লক্ষ মানুষকে সংক্রামিত করেছে, কয়েক হাজার মৃত্যু ঘটিয়েছে। শারীরিক ভাবে আক্রান্ত হওয়ার বিপদ যেমন আছে, তেমনই দেশজুড়ে অর্থনৈতিক সঙ্কটও প্রবল হয়েছে। এটা সকলের জন্যই মানসিক উদ্বেগের কারণ।’
শুধু তাই নয়। এত বড় পরীক্ষার জন্য বড় পরিকাঠামো, পরিষেবা, পরিবহণ সবই দরকার বলে মত হেমন্তর, যা এই সময়ে দেওয়া মুশকিল। তাঁর কথায়, ‘কোভিড সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করার জন্য ঝাড়খণ্ড সরকার এখনও গণপরিবহণ শুরু করেনি চালাতে। হোটেল, রেস্তরাঁ খোলার অনুমোদনও নেই। এর ফলে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের যাতায়াত এবং থাকা-খাওয়ার মারাত্মক সমস্যা হবে।’ পাশাপাশি তিনি জানান, যেসব পরীক্ষার্থীর বাড়ি কনটেনমেন্ট জোনের আওতায় রয়েছে বা যাঁদের বাড়িতে কোভিড রোগী আছেন বা তাঁরা নিজেরাই ভুগেছেন কোভিডে, তাঁদের পক্ষে সমস্যাজনক হবে পরীক্ষা দিতে যাওয়া।
হেমন্তর সাফ কথা, ‘একজন পরীক্ষার্থী সংক্রামিত কিনা, তা বোঝাও সবসময় সম্ভব না হতে পারে। রোখা তো আরই সম্ভব নয়। এর ফলে কোনও কেন্দ্রের সমস্ত পরীক্ষার্থী ও ইনভিজিলেটর আক্রান্ত হয়ে পড়তে পারেন। তাঁদের মধ্যে আবার কার কী কোমর্বিডিটি আছে তাও বোঝা সম্ভব নয়। ফলে এ তো জীবনের ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে!’ চিঠিতে সবশেষে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘ওপরের সব ক’টি কারণ বিবেচনা করে আমি আপনার কাছে আন্তরিক আবেদন রাখছি, মানুষের স্বার্থেই এই দুটি পরীক্ষা স্থগিত করা হোক এখন।’ উল্লেখ্য, সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বৈঠক করে জয়েন্ট ও নিট পরীক্ষা পিছনোর দাবি ওঠার একদিন পরেই এই চিঠি লিখে মোদী সরকারের ওপর আরও চাপ বাড়ালেন হেমন্ত সোরেন।