দেশে আনলক পর্ব শুরু হয়ে গেলেও করোনা আতঙ্কে জবুথবু বাজার। টাকা খরচ করার ঝুঁকি নিচ্ছেন না কেউই। আর তার ফলে সরকারের ঘর থেকে ভাতা-ভর্তুকি-অর্থ সাহায্য বাবদ অ্যাকাউন্টে পৌঁছে গেলেও তার মধ্যে শতকরা ৪০ ভাগ টাকাই খরচ হয়নি। ওই টাকা খরচ হলে বাজারে চাহিদা বাড়ত। অর্থনীতিও চাঙ্গা হত। কিন্তু প্রাপকরা সেই টাকা ব্যাঙ্কেই জমিয়ে রেখেছেন। এই প্রবণতা দেখে অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, করোনা ও তার ধাক্কা নিয়ে মানুষের মনে আতঙ্ক কমা দরকার। তা হলেই মানুষ ফের হাত খুলে খরচ করবে।
গতকাল অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ শিল্পমহলের সঙ্গে আলোচনায় আশ্বাস দিয়েছেন, কাঠামোগত সংস্কার সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। তাঁর মন্ত্রকের ব্যয়সচিব টি ভি সোমনাথন জানিয়েছেন, সরকার দ্বিতীয় দফা দাওয়াইয়ের কথা ভাবছে। কিন্তু তার সময়টা খুবই জরুরি। কারণ মানুষের মনে আতঙ্ক থাকার ফলে সরকার অর্থনীতি চাঙ্গা করার দাওয়াই দিলেও তার সীমাবদ্ধতা থেকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, অর্থনীতির কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক গতিতে চলছে না। কিন্তু তার সঙ্গে সরকার কী করেছে না করেছে, তার সম্পর্ক নেই। কারণ হচ্ছে মানুষের মনে আতঙ্ক।
সোমনাথনের যুক্তি, দেশের বহু জায়গায় স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এখনও স্পর্শকাতর অবস্থায় রয়েছে। ফলে সিনেমা হল, শপিং মল, রেস্তরাঁর মতো ক্ষেত্রে ব্যবসা প্রায় বন্ধ। সরকার নির্দেশ দিলে বা আর্থিক দাওয়াই দিলে এ সব জায়গায় ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক হবে না। আগে মানুষের মন থেকে আতঙ্ক কাটাতে হবে। তার পরে সরকার কিছু পদক্ষেপ করতে পারে। হোটেল-পর্যটন-বিমান-আবাসনে তুলনামূলক ভাবে বেশি ধাক্কা লাগায় সরকারের রাজস্ব আয়েও ধাক্কা লেগেছে বলে শিল্পমহলের সঙ্গে বৈঠকে অর্থমন্ত্রী মেনে নিয়েছেন।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সিআইআই সভাপতি উদয় কোটাক বলেছেন, এপ্রিল-মে মাসের তলানি দশা থেকে অর্থনীতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু বিভিন্ন রাজ্যে স্থানীয় স্তরে লকডাউনের ফলে পণ্য পরিবহণে বাধা আসছে। অর্থমন্ত্রী আশ্বস্ত করে বলেন, এক রাজ্য থেকে আর এক রাজ্যের পণ্য চলাচলে যাতে কোনও বাধা না আসে, তার জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যয়সচিবের মতো তিনিও মেনে নিয়েছেন, করোনার অতিমারির জন্যই কর্পোরেট করে কাটছাঁট করা সত্ত্বেও নতুন লগ্নী বাড়তে পারেনি।