তোমরা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আড়ালে লুকোতে পারবে না। বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারকে এভাবেই তিরস্কার করলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অশোক ভূষণ। সাফ জানিয়ে দিলেন, কেন্দ্রের লকডাউনের জন্যেই আজ দেশের অর্থনীতির এই দশা।
লকডাউনের সময় যাতে ঋণের ওপরে সুদ মকুব করা হয়, সেজন্য একটি পিটিশন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। কেন্দ্রীয় সরকার এদিন শীর্ষ আদালতে জানায়, সুদ মকুব করা হলে ব্যবসা বাণিজ্য ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কই সেকথা বলেছে। এই প্রেক্ষিতেই বিচারপতি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আড়ালে লুকোতে পারবে না। সারা দেশে লকডাউন করার জন্যই ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হয়েছে। দেশের অর্থনীতি বেহাল হয়ে পড়েছে।
লকডাউনের সময় সুদ মকুব করা সম্ভব কিনা তা ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে জানাতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিদের মতে, বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে সরকারের হাতে ব্যাপক ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়েছে। সরকার জানাক, তারা সুদ মকুব করবে কিনা।
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘এমন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয় যাতে সকলেই উপকৃত হবেন।’ তখনই বিচারপতি অশোক ভূষণ বলেন, আপনারা সারা দেশ লকডাউন করে দিয়েছিলেন বলেই আজ দেশের অর্থনীতির এই অবস্থা হয়েছে। সরকার আমাদের জানাক, ডিজাস্টার ম্যানেজমেট অ্যাক্ট অনুযায়ী তারা কী করতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চের অপর বিচারপতি বলেন, ‘এখন শুধু ব্যবসা-বাণিজ্যের কথা ভাবলে চলবে না।’
সুপ্রিম কোর্টে সুদ মকুব করার আবেদনে বলা হয়েছে, ২৭ মার্চ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল, তার একটি অংশ বাতিল করা হোক। তবে সুদ মকুব করা সম্ভব হবে। এই অবস্থায় যদি সুদ নেওয়া হয়, অনেকে দুর্দশায় পড়বেন। সংবিধানে যে বাঁচার অধিকার দেওয়া হয়েছে, তা লঙ্ঘন করা হবে। আরবিআই এর আগে ব্যাঙ্ককে জানায়, ঋণের ওপরে সুদ মকুব করা হলে ব্যাঙ্কের স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে। আবেদনকারীর হয়ে এদিন সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন বিশিষ্ট আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল। তিনি আবেদন করেন, ঋণের ওপরে যে স্থগিতাদেশ জারি করা আছে, তা ৩১ আগস্টের পরে আরও বাড়ানো হোক।