লাদাখ নয়, এবার ভারত-নেপাল-চীন সীমান্তে অবস্থিত কৈলাস পর্বতকে কেন্দ্র করে অন্যান্য ধর্মীয়স্থানগুলিতে সেনা মোতায়েন করছে চীন। তবে শুধুই সেনা মোতায়েন নয়, ভূমি থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র বসানো কাজও শুরু করে দিয়েছে তারা। সম্প্রতি উপগ্রহ চিত্রেই ধরা পড়েছে মানস সরোবরে যাওয়ার পথ ধরে লাল ফৌজের সামরিক প্রস্তুতি। স্যাটেলাইট ইমেজে কিছু নির্মাণকাজও ধরা পড়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে এই নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। আর আগস্টের সর্বশেষ উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, সেই নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। যা নিয়ে এদিন ফের কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিয়েছে দেশের বিরোধী দলগুলি। তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা।
প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ কৈলাস মানস সরোবরে তীর্থ করতে যান। হিন্দুদের কাছে এই স্থানের প্রবল ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে। উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে চীনের সামরিক উপস্থিতিতে গোটা তীর্থ এলাকা কেমন যুদ্ধক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে। জায়গায় জায়গায় প্রচুর চীনা সেনা মোতায়েন করা আছে। সেইসঙ্গে ভূমি থেকে আকাশ মিসাইল। চীনের এই সামরিক সজ্জা মানস সরোবরের পরিবেশ আমূল বদলে দিয়েছে।
পূর্ব লাদাখে ভারত-চীন সংঘাতের পর থেকেই কৈলাস মানস সরোবরের পথে ধর্মীয়স্থানগুলিতে লাল ফৌজে ভরিয়ে দিয়েছে বেজিং। দু-দেশের উত্তেজনার পারদ চড়েছে লিপুলেখ পর্যন্ত ভারত রাস্তা নির্মাণ করায়। এই লিপুলেখই উপরিউক্ত ৩ দেশ অর্থাৎ ভারত-নেপাল-চীনের সংযোগস্থল। ৩ দেশেরই সীমান্ত রয়েছে এখানে৷ ভৌগোলিক অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এই লিপুলেখকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি নয়াদিল্লী ও কাঠমান্ডুর মধ্যে কূটনৈতিক সংঘাত বাধে। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং লিপুলেখের রাস্তায় উদ্বোধন করার পরেই কেপি শর্মা অলির সরকার লিপুলেখকে নেপালের ভূখণ্ড হিসেবে দাবি করেন।
সেইসময় তিনি অভিযোগ করেন, ভারত জোর করে নেপালের ভূখণ্ডের দখল নিয়ে রেখেছে। এই বিরোধের মধ্যেই নতুন বিতর্কিত মানচিত্রে কালাপানি এবং লিম্পুয়াধুরার সঙ্গে উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখকে জুড়ে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে নেপাল৷ নয়া মানচিত্রের স্বীকৃতি আদায়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে তা পাঠানোর প্রস্তুতিও শুরু করে কেপি শর্মা অলির সরকার। এ বার সেই লিপুলেখেও ধীরে ধীরে নিজেদের বাহিনীর সংখ্যা বাড়াচ্ছে চীনও।
উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে যে, লিপুলেখের ট্রাই জংশন এলাকায় সেনা মোতায়েন করার পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্র বসানোর জন্য নির্মাণকাজ শুরু করেছে চীন৷ শুধু বাহিনী মোতায়েন নয়, বেজিং লিপুলেখে মিসাইল বসানোর প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে বলে বেশ কয়েকটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমেও দাবি করা হয়। চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকেই এখানে এই পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছিল তারা৷ গত কয়েক সপ্তাহে ধীরে ধীরে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে চীন৷ ইতিমধ্যে সেখানে মোতায়েন হয়েছে এক ব্যাটেলিয়ন বা ১ হাজার চীনা সেনা।