রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ না করার অভিযোগ আগেই এসেছিল। এবার দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পপতি অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে ওঠা সেই অভিযোগই খতিয়ে দেখতে সক্রিয় হল ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল। অনিলের মালিকানাধীন দু’টি সংস্থা দেউলিয়া হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে গতকাল ‘ব্যাঙ্করাপসি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর’ নিয়োগ করেছে আদালত। প্রায় ১২০০ কোটির বকেয়া ঋণ উদ্ধারের জন্য অনিলের সংস্থা রিলায়্যান্স কমিউনিকেশনস লিমিটেড এবং রিলায়্যান্স ইনফ্রাটেল লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। তারই প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত।
স্টেট ব্যাঙ্কের তরফে মুম্বইয়ের ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনালের সামনে দাবি জানানো হয়েছিল, বর্তমান পরিস্থিতিতে অনিলের মালিকানাধীন কোনও সংস্থাই যাতে সম্পত্তি কেনাবেচা করতে না পারে, তার নির্দেশ জারি হোক। কিন্তু আজ আদালত সেই দাবি খারিজ করায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন রিলায়্যান্স অনিল ধীরুভাই আম্বানি গ্রুপের কর্ণধার। অনিলের মুখপাত্র আজ বলেন, ‘‘ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কোনও প্রভাব রিলায়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড, রিলায়েন্স পাওয়ার লিমিটেড ও রিলায়েন্স ক্যাপিটাল লিমিটেডের উপর পড়বে না।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে আর-কম এবং রিলায়্যান্স ইনফ্রাটেল লিমিটেডের হয়ে ঋণ নেওয়ার সময় অনিল আম্বানি নিজেকেই ব্যক্তিগত গ্যারান্টর হিসেবে দেখিয়েছিলেন। অঙ্কটি ছিল প্রায় ১৬ কোটি ডলার (প্রায় ১,১৯৯ কোটি টাকা) কিন্তু অনিলের প্রায় সব সংস্থাই ঋণে জর্জরিত। ঋণের টাকা ফেরত দেওয়ার মতো অবস্থাই নেই। এই পরিস্থিতিতে বকেয়া উদ্ধারের জন্য ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ হয়েছিল দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। এই ট্রাইব্যুনালেই দেউলিয়া মামলার শুনানি হয়।
তবে শুধুই এসবিআই নয়, ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাঙ্ক’-সহ চীনেরও ৩ টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং দেশি-বিদেশি সংস্থার থেকে ঋণ নিয়ে শোধ না করার অভিযোগ রয়েছে অনিলের বিরুদ্ধে। গত বছরের মার্চে এরিকসনের সঙ্গে এমনই একটি মামলায় হেরে গিয়েছিল অনিলের সংস্থা আর কম। ৫৮০ কোটি টাকা শোধ না করলে তাঁকে জেলে যেতে হবে বলে রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। শেষ মুহূর্তে সেই টাকা শোধ করে অনিলকে জেলযাত্রা থেকে রক্ষা করেছিলেন তাঁর দাদা মুকেশ।