বর্তমানে গোটা বিশ্বেই অনলাইনে পড়াশোনা চলছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জেরেই এই নতুন উপায় অবলম্বন করা হচ্ছে৷ ভারতের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি অনলাইনে ক্লাস করানোর উপরে জোর দিচ্ছে৷ কিন্তু ভারতে কি আদৌ সব ছাত্র-ছাত্রী অনলাইনে পড়াশোনা করতে পারছে? উত্তরটা হল, একেবারেই না৷ দেশের একটি বড় অংশের পড়ুয়াই অনলাইনে ক্লাসের সুবিধা থেকে বঞ্চিত৷ তার উদাহরণ হল, এনসিইআরটি-র সার্ভে রিপোর্ট৷
সেই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, দেশের ২৭ শতাংশ পড়ুয়ার অনলাইনে পড়াশোনা করার মতো ডিভাইস, অর্থাৎ স্মার্টফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট ইত্যাদি নেই৷ এমনকি বিদ্যুত না থাকায় পড়াশোনা করতে পারছে না ২৮ শতাংশ পড়ুয়া৷ এই অনলাইন শিক্ষায় পড়ুয়ারা কী ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে, তা জানতে এনসিইআরটি-কে সম্প্রতি একটি কমিটি গড়ে দেশজুড়ে সমীক্ষা চালাতে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক৷ সেই সমীক্ষার রিপোর্টে উঠে এল অন্ধকার দিকটি৷
শিক্ষক-পড়ুয়ার সময়ের বোঝাপড়া, ডিভাইসের অভাব, বাড়িতে পড়াশোনার জন্য সাহায্য না পাওয়া, বিদ্যুত্ না থাকা- ইত্যাদি নানা তথ্য উঠে এসেছে সমীক্ষায়৷ যেখানে দেখা গেছে, স্কুল বন্ধ থাকায় বহু পড়ুয়া শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দিনের পর দিন৷ এই লকডাউন চলাকালীন ও আনলক প্রক্রিয়া শুরুর পরে দেশের ৫০ শতাংশ পড়ুয়া সমস্যার সম্মুখীন৷ ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পড়ুয়া জানিয়েছে, খুব খারাপ অভিজ্ঞতা তাদের৷ ১০ থেকে ২০ শতাংশ পড়ুয়া স্পষ্ট বলে দিয়েছে, এই ভাবে পড়াশোনা তাদের কাছে বোঝা হয়ে গিয়েছে৷
সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, “বেশিরভাগ এলাকাতেই খারাপ ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্কের সমস্যা চরম৷ মোবাইল ফোনে অনলাইন ক্লাস করা খুবই কঠিন৷” যাদের কাছে ডিভাইস রয়েছে, তাঁরা অনেকেই জানে না, অনলাইন শিক্ষার জন্য ডিভাইসটি কী ভাবে ব্যবহার করবে৷ এমনকি বহু শিক্ষক-শিক্ষিকাও অনলাইন ক্লাস নেওয়ার পদ্ধতি জানেন না বলে উঠে এসেছে সমীক্ষায়৷ এছাড়াও, অর্ধেক ছাত্রছাত্রীর সাধারণ অভিযোগ, তাঁরা হার্ড কপি টেক্সট বই পড়ে অভ্যস্ত৷ ই-টেক্সট বুক সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই৷