করোনা সংক্রমণ রুখতে সেই মার্চ মাস থেকে গোটা দেশজুড়ে জারি হয় একটানা লকডাউন। সম্প্রতি আনলকিং প্রক্রিয়া শুরু হলেও এখনও স্বাভাবিক হয়নি গণপরিবহণ ব্যবস্থা। কবে সেটা হবে তাও বলা মুশকিল। কিন্তু এর মধ্যেও মধ্যপ্রদেশ সরকারের তরফে দশম ক্লাসের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে ট্রেন-বাস কিছুই না পেয়ে নিজের সাইকেলেই ছেলেকে বসিয়ে ১০৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন বাবা। কারণ প্রাণ গেলেও ছেলের পরীক্ষা মিস করাতে নারাজ ছিলেন তিনি।
৩৮ বছরের শোব্রাম নিজে পড়াশোনা করেননি। তবে জীবনে পঠনপাঠনের গুরুত্ব কতটা তা ভালোভাবেই জানেন। তাই তিনি কোনও ভাবেই চান না, সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা মিস করে তার ছেলে এক বছর নষ্ট করুক। ইচ্ছে সত্ত্বেও উপায় ছিল না। কোভিড পরিস্থিতির মাঝে একেই টাকাপয়সা নেই গাড়ি ভাড়া করার। গণপরিবহণ ব্যবস্থা তো কবে থেকেই বন্ধ। তবু ছেলেকে নিয়ে যেতেই হবে। অতএব, লাগাও পা। সাইকেলে ছেলেকে বসিয়ে প্যাডেল করেই নিজের গ্রাম থেকে মধ্যপ্রদেশের ধর শহরে এসে উপস্থিত হন তিনি।
যে সব ছাত্ররা ক্লাস ১০এর পরীক্ষায় প্রথমবারে অকৃতকার্য হয়েছে, তাদের দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়ার জন্য ‘রুক জানা নেহি’ নামক একটি প্রকল্প এনেছে শিবরাজ সিং সরকার। যেটি আদতে ব্যর্থ হওয়া বিষয়ে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ। সেই পরীক্ষা দেওয়ানোর জন্যই ১০৫ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে পাড়ি দেন শোব্রাম। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে বাস সহ কোনও পরিবহণ ব্যবস্থাই ছিল না। কিন্তু যদি এই সুযোগ হাতছাড়া করতাম, আমার ছেলের এক বছর নষ্ট হয়ে যেত। সেই কারণে আমি সাইকেলেই ওকে পরীক্ষা দেওয়ানোর জন্য নিয়ে গেলাম।’