লকডাউন পর্বে রেলের আয়ের ভাঁড়ার সেভাবে ভরেনি। পণ্যবাহী ট্রেন চালু থাকলেও শিল্পক্ষেত্রে চাহিদা তলানিতে এসে ঠেকায় পণ্য পরিবহণ থেকে আয় হয়নি তেমনি। সারা দেশে বেশির ভাগ যাত্রীবাহী ট্রেন চলছে না। লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি পাওয়ায় একাধিক বার রেলকে অগ্রিম টিকিট বুকিংয়ের টাকা ফিরিয়ে দিতে হয়েছে। যাত্রীভাড়া ছাড়া বিজ্ঞাপন এবং অন্যান্য ক্ষেত্র থেকেও রেলের ভাঁড়ারে সে ভাবে টাকা আসেনি। আর এর ফলে বিপুল অর্থসঙ্কটের মুখে পড়েছে ভারতীয় রেল৷ এই পরিস্থিতিতে বাধ্যতামূলক স্বেচ্ছাবসর দেওয়া শুরু হয়েছে রেলে। পঞ্চান্ন বছর বয়স ও ত্রিশ বছর চাকরির যেটি আগে পূর্ণ হবে, এমন কর্মীদের বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল।
প্রাথমিকভাবে বাছাইপর্বের পর তাঁদের কর্ম জীবনের খতিয়ান দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রেল। ইতিমধ্যে তালিকাবদ্ধদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তিন মাসের নোটিসে বাধ্যতামূলক স্বেচ্ছাবসর দেওয়া হবে কর্মীদের। এজন্য কমিটিকে আবেদন জানালেও তা গ্রাহ্য করা হবে না বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে তালিকাবদ্ধদের মধ্যে যাঁরা কোনওরকম নোটিস ছাড়াই ছুটি নিয়েছেন তাঁদের অবাধ্য বলে গণ্য করবে কমিটি। কাজে দক্ষতা বা বাৎসরিক গোপন রিপোর্টের ওপরও বাধ্যতামূলক স্বেচ্ছাবসরে পাঠানোর বিষয়টি নির্ভর করবে বলে রেল কর্তারা জানিয়েছেন।
রেল বোর্ডের নির্দেশে বিভিন্ন জোন কর্মীদের বয়স ও কত বছর চাকরি করছেন তার তালিকা তৈরি করছে। পূর্ব রেল গত জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে যাঁদের বয়স পঞ্চান্ন ও কর্মজীবন ত্রিশ বছর হয়েছে এমন তালিকা তৈরি করে ফেলেছে। তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই কর্মীদের মধ্যে কাজ হারানোর আতঙ্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। কর্মী সংগঠনের অভিযোগ, এই বয়সে সন্তানদের উচ্চশিক্ষা চলে, বিভিন্ন ঋণ শোধ করার প্রক্রিয়া চলে। ফলে কর্মীরা চরম অসুবিধার মধ্যে পড়বেন। পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, ৩৭২ জনের লিস্ট তৈরি হয়েছে। কীসের ভিত্তিতে ওই ৩৭২ জনকে আনা হলো তালিকায় তা অস্পষ্ট। যাঁরা দক্ষ, নিয়মিত কাজে আসেন তাঁদের সরালে চরম পদক্ষেপ করবে কর্মী সংগঠন।