যোগী রাজ্যে নারীসুরক্ষার হাল যে ক্রমশই আরও খারাপ হচ্ছে প্রতিদিন, বারবারই মিলছে তাঁর প্রমাণ। কখনও উন্নাওয়ের আসিফা-কাণ্ড বা বিজেপি বিধায়কের বাড়ি চাকরি চাইতে যাওয়া কিশোরীকে নিগ্রহ, তো কখনও আবার তরুণীকে গণধর্ষণ বা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাতে আইনের ছাত্রীর শ্লীলতাহানী-ধর্ষণ — এমনই নানা ঘটনার জেরে বারবারই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে উত্তরপ্রদেশ। এই করোনা পর্বেও বজায় রয়েছে সেই ধারা। এবার যোগীশাসনে বর্বরদের যৌন লালসার হাত থেকে নিস্তার পেলেন না ষাট বছরের এক বৃদ্ধা। উত্তরপ্রদেশের সিদ্ধার্থনগর জেলায় বছর ষাটেকের ওই বৃদ্ধাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে পুলিশ। ধর্ষণের এই ঘটনাটি যদিও গত শনিবার (১৫ আগস্ট) ঘটেছে। তবে, মঙ্গলবার অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পরই তা সামনে আসে।
জানা গিয়েছে, সিদ্ধার্থনগরের শোহরতগঢ়ে বাড়ি নির্যাতিতা বৃদ্ধার। শনিবার তাঁকে তাঁর গ্রামেরই উপকণ্ঠে একটি নির্জন জায়গা থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সারা শরীরে ছিল আঘাতের চিহ্ন। ধর্ষণের অভিযোগে সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তিকে এরই মধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানায়, ধৃতরাই কয়েক জন গ্রামবাসীকে ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন। তার পর মহিলাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। মহিলা এখন সেখানেই চিকিত্সাধীন। পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় নির্যাতিতার জ্ঞান ফেরে। তার পরেই তিনি পুলিশের কাছে বয়ান দেন। তিনি অভিযোগ করেন, গ্রামেরই দু’জন তাঁকে ধর্ষণ করে। শারীরিক অত্যাচারও করা হয়। তাঁর সঙ্গে কথা বলেই পুলিশ বালিকর্ণ ও রাম নামে দুই অভিযুক্তের কথা জানতে পারে। ধর্ষিতার অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিগত কয়েক দিনের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে একাধিক ধর্ষণ-খুনের ঘটনা ঘটেছে। যার জেরে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বিরোধীদের অভিযোগ,যোগীশাসনে উত্তরপ্রদেশে জঙ্গলরাজ কায়েম হয়েছে। মেয়েরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। হেনস্থার ভয়ে বাড়ির বাইরে বেরোনের সাহস পাচ্ছে না। ধর্ষক, খুনি, অপহরণকারীদের কেন দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে লক্ষিমপুর খেরির ঘটনা যোগীকে সবথেকে বেশি অস্বস্তিতে ফেলে। খেরিতে বছর তেরোর এক নাবালিকাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। ঘটনার পরদিন আখখেত থেকে ওই কিশোরীর বিকৃত দেহ উদ্ধার হয়। মেয়েটির বাবা দাবি করেন, ধর্ষকরা তাঁর মেয়ের চোখ উপড়ে নেয়। জিভও কেটে ফেলেছিল। যদিও পুলিশ তা মানেনি। তবে, ধর্ষণের পর কিশোরীকে যে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছিল, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সে প্রমাণ মিলেছে।