যোগী রাজ্যে নারীসুরক্ষার হাল যে ক্রমশই আরও খারাপ হচ্ছে প্রতিদিন, বারবারই মিলছে তাঁর প্রমাণ। কখনও উন্নাওয়ের আসিফা-কাণ্ড বা বিজেপি বিধায়কের বাড়ি চাকরি চাইতে যাওয়া কিশোরীকে নিগ্রহ, তো কখনও আবার তরুণীকে গণধর্ষণ বা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাতে আইনের ছাত্রীর শ্লীলতাহানী-ধর্ষণ — এমনই নানা ঘটনার জেরে বারবারই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে উত্তরপ্রদেশ। এই করোনা পর্বেও বজায় রয়েছে সেই ধারা। হাপুর, লখিমপুরের পরে এবার গোরক্ষপুরে ধর্ষিতা হতে হল এক নাবালিকাকে। নৃশংস নির্যাতনের সাক্ষী থাকল যোগীরাজ্য।
ইটভাটার পাশ থেকে মেয়েটিকে যখন উদ্ধার করা হয় তার সারা শরীরে রক্তে মাখামাখি। চামড়া পুড়ে দগদগে ক্ষত হয়ে আছে। রক্ত জমে সারা শরীরে কালশিটের দাগ। নাবালিকাকে এমন অবস্থায় অচৈতন্য হয়ে পড়ে থাকতে দেখে শিউরে ওঠেন পুলিশ কর্তারাও। সঙ্গে সঙ্গেই নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ মেলে। ধর্ষণের অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নির্যাতিতার পরিবার জানিয়েছে, গত শুক্রবার থেকেই নিখেোঁজ ছিল মেয়েটি। বাড়ির সামনের কল থেকে জল ভরতে গিয়েছিল। আর ফিরে আসেনি। সারা গ্রাম খুঁজেও মেয়ের সন্ধান না পেয়ে থানায় নিখোঁজ ডায়রি করে পরিবার। পুলিশ অফিসার বিপুল শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, শনিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ গ্রামের বাইরে একটি ইটভাটার কাছ থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়।
গোরক্ষপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে নাবালিকার। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, মেয়েটির ওপর নারকীয় নির্যাতন চালানো হয়েছে। মারধরের চিহ্নও রয়েছে। ধর্ষণের পরে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে সারা শরীর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মেয়েটির অবস্থা সঙ্কটজনক। নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘জ্ঞান ফিরতেই মেয়ে বলেছে বাড়ির সামনে থেকে দু’জন তাকে তুলে নিয়ে যায়। সারা রাত তাকে মারধর করে, নির্যাতন চালায়। সে কান্নাকাটি করলে মুখ বন্ধ রাখতে বলে। তারপর সিগারেটের ছ্যাঁকা দিতে থাকে সারা শরীরে।’ পুলিশ জানিয়েছে, নাবালিকা ও তার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পকসো আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাকড়াও করা হয়েছে দুজনকে। ধৃতদের একজন ওই গ্রামেরই বাসিন্দা অর্জুন। তাঁকে জেরা করে ছোটু নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই দুজনকেই আদালতে তোলা হবে।