একসময় ব্রিটেনের স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডসের সঙ্গে তুলনা করা হতো আমাদের কলকাতা পুলিশকে। কিন্তু এখন তার থেকেও আরও ভাল কাজ করছে কলকাতা পুলিশ। সোমবার বিকেলে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে লালবাজারকে এমনভাবেই প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, বিগত কয়েক মাসের কোভিড পরিস্থিতিতে রাস্তায় নেমে লড়াই করেছেন পুলিশকর্মীরা। এখন আমাদের পুলিশ ‘ওয়ান অফ দ্য বেস্ট’!
মুখ্যমন্ত্রী জানান, সকলে যখন দরজা বন্ধ করে করোনা মোকাবিলা করেছেন, তখন রাস্তায় নেমে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। সময়ের অতিরিক্ত কাজ করে চলেছেন তাঁরা। ঝুঁকি নিয়ে ট্র্যাফিক সামলাচ্ছেন একটা বড় অংশ। অনেককে ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকতে হচ্ছে ব্যারাকে। ইতিমধ্যেই বহু পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত, মারাও গেছেন ১৮ জন। তার পরেও তাঁরা লড়াই করে যাচ্ছেন মানুষের জন্য। পুলিশের সংক্রমণ ঠেকাতে নতুন ব্যারাক তৈরি করা হবে দূরত্ব বিধি মেনেই, তা আগের প্রতিবেদনেই প্রকাশিত হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “বাংলায় ১০ কোটি মানুষ বাস করেন। ঘিঞ্জি এলাকা। তার মধ্যেও লকডাউন কেউ মানছেন কিনা বা সঠিক ভাবে মাস্ক পরছেন কিনা– এই যাবতীয় বিষয়ই দেখভাল করছেন পুলিশকর্মীরাই। কনটেইনমেন্ট জোনে পৌঁছে দিয়েছেন খাবার কিংবা ওষুধপত্র। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি নানা মানবিক ও সামাজিক কাজ করেছে পুলিশ। তারপরেও যা কিছু হচ্ছে পুলিশকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। এটা ঠিক নয়। এত বড় রাজ্যে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, তা সত্যিই অনভিপ্রেত। কিন্তু সেসব বাদ দিলে এই পরিস্থিতিতে পুলিশের অবদান অপরিসীম।”
এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, অন্য রাজ্যগুলির দিকে তাকালে পুলিশি ব্যবস্থার করুণ হাল চোখে পড়ে। তিনি বলেন, যাঁরা কথায় কথায় রাজ্যের পুলিশকে বদনাম করেন, তাঁরা যেন উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, বিহারের মতো রাজ্যের পুলিশি ব্যবস্থার দিকে চোখ রাখেন। সেই তুলনায় আমাদের রাজ্যের পুলিশ কয়েক যোজন এগিয়ে। তাদের থেকে অনেক ভাল কাজ করছে বাংলার পুলিশ।
তবে, এদিন অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য একটি সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলা ও কলকাতা পুলিশে এবার থেকে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য কমন ক্যাডার গ্রেডেশন করা হচ্ছে। যাতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে পুরুষ কর্মীদের পাশাপাশি মহিলা কর্মীরাও সমান সুবিধা পাবে। তাঁর কথায়, “রাজ্য পুলিশে প্রমোশনের ক্ষেত্রে পুরুষ ও মহিলা ক্যাডেটদের মধ্যে কোন সামঞ্জস্য ছিল না। পদন্নোতির ক্ষেত্রে পুলিশ ও মহিলা ক্যাডারদের ক্ষেত্রে এবার থেকে অভিন্ন ক্যাডার তালিকা প্রকাশ করা হবে।”