উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরের বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত জনপ্রিয় চিকিৎসক প্রদীপ ভট্টাচার্যের মৃত্যু নিয়ে নড়েচড়ে বসল রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। মেডিকা হাসপাতালে টেক্সট মেসেজ করে করোনা আক্রান্ত মৃত চিকিৎসকের আকাশছোঁয়া বিল ফের রিভিউ করে কিছু টাকা পরিবারের হাতে দেওয়ার জন্য আবেদন জানাল রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। এ যেন এক নজির বিহীন ঘটনা।
প্রদীপ ভট্টাচার্যের মৃত্যুর পর পরিবারের হাতে প্রায় ১৯ লাখ টাকার বিল ধরানোর বিষয় নজরে আসতেই মেডিকা হাসপাতালকে বিল রিভিউ করে কমানোর আবেদন জানাল স্বাস্থ্য কমিশন।
বুধবার কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীম কুমার বন্দোপাধ্যায় বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই প্রথম বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। চিকিৎসক প্রদীপ ভট্টাচার্য অত্যন্ত জনপ্রিয় চিকিৎসক ছিলেন। আজ সকাল একটি মেসেজ করা হয় সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। সেখানে কমিশনের তরফে বলা হয় যে প্রদীপবাবুর বিলের রিভিউ করা হোক। কারণ ১৮ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা বিল হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাই সেই বিলটি পুনরায় খতিয়ে দেখা হোক। দেখে যদি কিছুটা কম করা যায়, তাহলে যেন সেটা বাড়ির লোককে ফেরৎ দেওয়া হয়। আমরা বুধবার সকালে ১০টা ১৮-তে এই মেসেজ করেছিলাম। ৫ মিনিটের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের উত্তর দিয়ে জানিয়েছেন যে তাঁরা বিলটি রিভিউ করছেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।”
করোনা আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ প্রদীপ ভট্টাচার্য বেসরকারি মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ডাক্তার বাবুর হাসপাতালের বিল চড়চড় করে বাড়তে থাকায় স্থানীয়রাই চাঁদা তোলেন। কারণ, ডাক্তারবাবু আর পাঁচজন ডাক্তারের মত নন। এই দুঃসময়ে একদিনও চেম্বার বন্ধ রাখেননি। বিনা পয়সায় রোগী দেখেছেন। শুধু এখন নয়, এর আগেও যখন যেকোন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ তাকে পেয়েছেন। একবার ডাকলে বাড়িতে এসে ডাক্তার বাবু রোগী দেখতেন। কিন্তু করোনায় তার অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ শ্যামনগরবাসী।