অধিকাংশ করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিই কমবেশি এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। প্রশাসনের তরফে বারবার রোগী নয়, রোগের সঙ্গে লড়াইয়ের কথা বলা হলেও, অনেক জায়গায় রোগীকে একঘরে করে দেওয়ার মতো ঘটনা দেখা যাচ্ছে। কোথাও আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় কুরুচিকর ভাষায় যা তা লেখা হচ্ছে। সেখানে করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়া এক ব্যক্তিকে বাইকে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ঝাড়গ্রামের এক তৃণমূল নেতা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন ধরেই জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরের সিজুয়া গ্রামের এক বাসিন্দা। কিন্তু আতঙ্কের জেরে তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসেনি কেউ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া বা তাঁর করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা, স্থানীয়দের কেউই তাঁর পাশে এসে দাঁড়ায়নি। এমনকী কেউ কোনও অ্যাম্বুল্যান্স বা গাড়িকেও খবর দেয়নি। যার ফলে বিপাকে পড়েন ওই ব্যক্তির পরিবার। অসহায় অবস্থায় কী করবেন, তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না।
সেই খবরই পৌঁছে যায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা গোপীবল্লভপুরের ১ ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি সত্যকাম পট্টনায়েকের কাছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি একটি পিপিই কিট পরে বাইক নিয়ে পৌঁছে যান ওই ব্যক্তির বাড়িতে। এরপরই জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিয়ে তিনি পৌঁছে যান গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেই তৃণমূল নেতার মানবিক এই উদ্যোগের প্রশংসা এখন সর্বস্তরে। তাঁর পরিবার ও অনুগামীদের কথায়, “কারও বিপদের কথা শুনলে ওকে বাড়িতে আটকে রাখা দায়। এখন আমরা আর কোনও কিছুতেই বারণ করি না। তবে ওর কাজকর্মে এখন গর্ব হয়। ওর কাজে দলও গর্বিত।”
আর সত্যকাম পট্টনায়ক নিজে বলছেন, “আমার গ্রামের বহু বাসিন্দাই ভিনরাজ্যে কাজ করতেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন করোনায় আক্রান্তও হয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে জ্বরে ভুগছিলেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু তাঁকে কেউ হাসপাতালে নিয়ে যায়নি। আমি খবর পেয়েই একটি পিপিই কিনি। আর তারপরই নিয়ে যাই হাসপাতালে। এটা আমার কর্তব্য।” প্রসঙ্গত, বর্তমানে গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই ব্যক্তি।