গোটা বিশ্বেই বিগত কয়েক মাস ধরে হাজারও গবেষণা চলছে, পরীক্ষা-নিরিক্ষা চলছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর কোন দেশই করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি। ওষুধ মিলেছে এমন কোন তথ্য স্বীকার করেনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। আর এই সুযোগেই রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে করোনার আয়ুর্বেদিক ওষুধ ‘করোনিল’ বাজারে আনে যোগগুরু বাবা রামদেবের সংস্থা পতঞ্জলি। যা খেলে নাকি একদিকে যেমন করোনা হবে না, তেমনি করোনা আক্রান্ত একজন মানুষও ৭ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবেন। কিন্তু কোনও তথ্যপ্রমাণ দেওয়া তো দূর, এমনকী সেই ওষুধের জন্যে কোনও অনুমতিও নেয়নি পতঞ্জলি। একপ্রকার চাপে পড়েই সেইসময় আয়ূষ মন্ত্রক পতঞ্জলির করোনিলের বিজ্ঞাপন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল। এফআইআর’ও দায়ের হয় রামদেবের বিরুদ্ধেও। বাধ্য হয়ে পতঞ্জলি জানায়, করোনা রুখতে কোনও ওষুধ তাঁরা আবিষ্কার করেনি। এবার আদালতেও ব্যাপক চাপে পড়ল পতঞ্জলি।
মাদ্রাজ হাইকোর্টে এ বিষয়ে দায়ের হয়েছিল একটি মামলা। সেই মামলাতেই মানুষের আতঙ্কের সুযোগ নিয়ে করোনা সারিয়ে দেওয়ার ভুয়ো দাবি করার ভর্ৎসনা করার পাশাপাশি ট্রেডমার্ক আইনে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে পতঞ্জলিকে। চেন্নাই-বেসড অারুদ্রা ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিডেট নামে একটি সংস্থা আদালতে অভিযোগ করেন, ‘করোনিল ৯২-বি’ নামে তাঁদের একটি অ্যাসিড ইনহিভিটর রয়েছে, যা শিল্প উৎপাদনের নানা কাজে লাগে। সেই নামের অ্যাসিড ইনহিভিটরটির ট্রেডমার্ক তাঁদের নেওয়া রয়েছে ২০২৭ সাল পর্যন্ত। কিন্তু ট্রেডমার্ক আইনের তোয়াক্কা না করে ওই নামেই করোনার ওষুধ দাবি করে বাজারে ‘করোনিল’ নিয়ে আসে পতঞ্জলি। মূলত এই বিষয়েই পতঞ্জলিকে জরিমানা করেন বিচারপতি। উল্লেখ্য, ‘করোনিল’ নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পর এ-ও জানা গিয়েছিল যে, উত্তরাখণ্ড ড্রাগ দফতরের কাছে তাঁরা কেবলমাত্র রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাবৃদ্ধি ও জ্বর-কাশির ওষুধের লাইসেন্স নিয়েছিল। আর সেই লাইসেন্স নিয়েই করোনার ওষুধ আবিষ্কারের দাবি করেন রামদেব। পরে অবশ্য উত্তরাখণ্ড ড্রাগ দফতরের তরফে তাঁদেরকে নোটিশ পাঠানো হয়।