এই করোনা আবহের মধ্যেই বুধবার ধুমধাম করে ভূমিপুজো হয়েছে অযোধ্যায় রাম মন্দিরে। সেই ভূমি পূজনে বাংলার নানা স্থানের মাটি, নদীর জল গিয়েছে। মাটি গেছে নদীয়ার বয়রা গ্রাম থেকেও। কারণ এখানেই রয়েছে বাংলা রামায়ণের রচয়িতা কবি কৃত্তিবাসের ভিটে। কিন্তু সে ভিটে আজও উপেক্ষিত। শ্রীপঞ্চমীতে কবির জন্মদিনে একটু ফুল-মালা পেলেও সারা বছর নজরও পড়ে না। অযোধ্যায় অনেক বিতর্কের শেষে ভব্য মন্দির গড়ার তোড়জোড় যখন চলছে তখন কি একটু নজর দাবি করতে পারে না কৃত্তিবাসের ভিটে? এমনই প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। বলছেন, রাম মন্দির নির্মাণ গর্বের, কিন্তু ফুলিয়ার কাছে বয়রা গ্রামে কৃত্তিবাসের ভিটে কি একটু সংস্কারের ছোঁয়াও পেতে পারে না?
নদীয়া জেলার ফুলিয়ার বেলঘড়িয়া এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বয়রা গ্রাম। এই গ্রামের বট গাছের নীচে বসেই কবি কৃত্তিবাস ওঝা বাংলা ভাষায় রামায়ণ অনুবাদ করেছিলেন। এটাই কবির পৈত্রিক ভিটে নামে পরিচিত। কিন্তু নদিয়ার এই পূণ্যভূমি আজও উপেক্ষিত। কৃত্তিবাস ওঝা যেখানে বসে বাংলায় রামায়ণ লিখেছিলেন সেই বটগাছ আজও বর্তমান। রয়েছে তার ব্যবহৃত কুয়ো। শ্রীপঞ্চমীর দিনে কৃত্তিবাস ওঝার জন্মদিন পালন হয় কোনও রকমে। এলাকাবাসীদের দাবি, অনেক দেরী হয়েছে, কিন্তু আর নয়। এবার কবির জন্মভূমিকে পর্যটন শিল্প হিসেবে গড়ে তোলা হোক।
স্থানীয় বাসিন্দা বাপন ঘোষ বলেন, ‘রাম মন্দির এতদিন পর হচ্ছে বলে আমরা যথেষ্ট আনন্দিত। কিন্তু বাংলায় যে গ্রাম থেকে রামের নাম উচ্চারিত হয়েছিল, সেই গ্রামে কবি কৃত্তিবাসের স্মৃতি সংরক্ষণ করা হোক। কবির ব্যবহৃত জিনিসপত্র সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’ আর এক বাসিন্দা সুবল বিশ্বাস বলেন, ‘ফুলিয়া নামটার সঙ্গে সঙ্গেই উঠে আসে কৃত্তিবাস ওঝার কথা। পাশাপাশি রামের শহর হিসেবেও যথেষ্টই পরিচিত ফুলিয়া। কৃত্তিবাসের জন্মভূমির মাটি আর স্থানীয় ঘাট থেকে গঙ্গার জল দিয়েও অযোধ্যার পুণ্য ভূমিকে পবিত্র করা হয়েছে। এবার একটু উন্নয়নের ছোঁয়া পাক এই এলাকা।’