শিক্ষার আলোই একজন মানুষের মনের অন্ধকারকে দূর করে তাঁকে পরিপূর্ণ করে তোলে, এমনটা মনে করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাই রাজ্যে ক্ষমতায় এসেই শিক্ষাক্ষেত্রের হালহকিকত বদলে দিয়েছেন তিনি। নারীশিক্ষার প্রসারে যেমন আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া কন্যাসন্তানদের জন্য কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করেন মমতা। তেমনি সবুজ সাথী প্রকল্পে সাইকেল দিয়েছেন পড়ুয়াদের। এবার রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের জন্য তিনটি নতুন বৃত্তি নিয়ে এল তাঁর সরকার। বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, মুসলিম, পার্সি এবং শিখ সম্প্রদায়ের মেধাবী পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের আশায় আলো জ্বালাতে এই উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ১ আগস্ট থেকে, প্রথম থেকে দশম শ্রেণি, একাদশ থেকে পিএইচডি কোর্স এবং পেশাদারি ও কারিগরি কোর্সের পড়ুয়ারা এই বৃত্তি পেতে আবেদন করতে পারবে।
মূলত তিনটি আলাদা নামে এই স্কলারশিপ দেওয়া হবে। প্রথম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য ‘প্রি-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ’। এই বৃত্তিতে বার্ষিক ১১০০ টাকা থেকে ১১০০০ টাকা প্রদান করা হবে পড়ুয়ার খরচ সাপেক্ষে। রাজ্য সরকার স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে পড়ার পাশাপাশি পড়ুয়ার বাড়ির বার্ষিক আয় দু’ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলেই এই বৃত্তি পাওয়া যাবে। এরপর, একাদশ থেকে পিএইচডি কোর্সের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে ‘পোস্ট ম্যাট্রিক স্কলারশিপ’ প্রদান করা হবে। যে সমস্ত পড়ুয়ারা রাজ্যের স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে উচ্চমাধ্যমিক, আইটিআই, ডিপ্লোমা, স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল, বিএড ইত্যাদি কোর্স নিয়ে পড়াশোনা করছে তাদের জন্য এই বৃত্তি। এক্ষেত্রে বার্ষিক সর্বাধিক ১৬,৫০০ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হবে।
‘মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপ’ মূলত সেই সমস্ত পড়ুয়াদের জন্য যারা পেশাদারি ও কারিগরি কোনও কোর্সে পড়াশোনা করবে। এক্ষেত্রে পড়ুয়াকে বাংলার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার পাশাপাশি রাজ্য সরকার স্বীকৃত কোনও প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর কিংবা অন্য কোনও কারিগরি বা পেশাদারি কোর্স করা হতে হবে। অথবা, বাংলা বা বাইরে থেকে আইআইটি, আইআইএম, এনআইটি, এনআইএফটি, আইআইএফটি ইত্যাদির মতো কোর্স করেছেন, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে তাদের পরিবারের বার্ষিক আয়ের ঊর্ধ্বসীমা হতে হবে ২.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। এতে বার্ষিক সর্বাধিক ৩৩,০০০ টাকা পর্যন্ত বৃত্তি দেওয়া হবে। এই স্কলারশিপে আরেকটি সুযোগও দেওয়া হয়েছে। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের টিউশন ফি পরিশোধ করা হবে। www.wbmdfc.org ওয়েবসাইটে উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলির নাম ঘোষণা করা থাকবে বলে জানানো হয়েছে।