সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্তে এবার নয়া মোড়। মুম্বই পুলিশের মতে, তাঁর বাইপোলার ডিসঅর্ডার ছিল। মানসিক রোগের ওষুধও খাচ্ছিলেন তিনি। এখনও অবধি ৫৬ জনকে জেরা করে এই তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে বলেই দাবি করেছেন মুম্বই পুলিশের কমিশনার পরম বীর সিং। তাঁর আরও দাবি, মৃত্যুর দিনকয়েক আগে নিজের নাম গুগলেও খুঁজেছিলেন অভিনেতা। বিশেষত তাঁর ম্যানেজার দিশা স্যালিয়ানের আত্মহত্যার ঘটনার সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে মিডিয়াতে কোনও খবর রটছে কিনা, সেই বিষয়েই সার্চ করেছিলেন তিনি। সুশান্তের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ ঘেঁটে এমনই তথ্য পাওয়া গেছে।
মুম্বই পুলিশ কমিশনারের বক্তব্য, অভিনেতার মৃত্যুর পর থেকে তাঁর আত্মীয় ও অনাত্মীয়, ঘনিষ্ঠ কর্মচারী, বান্ধবী ও তাঁর পরিবারের লোকজন সহ মোট ৫৬ জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। প্রত্যেকের জবানবন্দী নিয়েই নাকি নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, সুশান্ত বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছিলেন। তার জন্য চিকিৎসা চলছিল। তিনি নিয়মিত এই রোগের ওষুধও খেতেন। কমিশনার পরমবীর বলেছেন, ঠিক কী পরিস্থিতিতে অভিনেতার মৃত্যু হয়েছে, এই মৃত্যুর সঙ্গে কোন কোন ঘটনা জড়িয়ে রয়েছে, এখন সেটাই এই তদন্তের মূল লক্ষ্য।
সুশান্ত সিং রাজপুত তীব্র মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন, তাঁর বাইপোলার ডিসঅর্ডার ছিল, সম্প্রতি এমন দাবি করেছেন তাঁর থেরাপিস্ট ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট ডক্টর সুজান মোফাট ওয়াকারও। সংবাদমাধ্যমের সামনে সুজান জানান, মানসিক স্থিতি ঠিক ছিল না সুশান্তের। বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছিলেন তিনি। বাইপোলার ডিসঅর্ডার হল এমন এক মানসিক স্থিতি, যেখানে মেজাজ বদলে যেতে পারে যে কোনও অবস্থাতেই। কখনও হাসিখুশি, আবার কখনও তীব্র অবসাদে আচ্ছন্ন হয়ে পড়তে পারে রোগী। এমনকি এক দ্বৈত সত্তারও জন্ম হয়।
তবে মানসিক অবসাদের প্রসঙ্গ তুলে এনে সুশান্তের মৃত্যু রহস্যকে অন্যদিকে ঘোরানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে নানা মহলে। সুশান্তের থেরাপিস্টের বক্তব্য নিয়েও ঘোর সংশয় তৈরি হয়েছে। অভিনেতার জামাইবাবু বিশাল কির্তী বলেছেন, বাইপোলার ডিসঅর্ডারের মতো জটিল মানসিক রোগের চিকিৎসা করতে হলে রোগীকে দীর্ঘসময় পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। বাইপোলার ডিসঅর্ডার-১ নাকি বাইপোলার ডিসঅর্ডার-২ বা তারও উপরে রোগী ঠিক কোন স্টেজে রয়েছে সেটা জানার জন্য খুব কাছে থেকে কাউন্সেলিং করার প্রয়োজন হয়। বিশালের দাবি, অন্তত ৬ বছর লাগে এই ধরনের রোগের চিকিৎসার সঠিক ফলাফল পেতে। সুজান সেখানে দু’মাসেরও কম সুশান্তের কাউন্সেলিং করছিলেন। মাত্র কয়েকটাই সিটিং হয়েছিল সুশান্তের সঙ্গে। এরমধ্যেই তিনি এতটা গভীর ভাবে সব বুঝে গেলেন কীভাবে, প্রশ্ন তুলেছেন বিশাল।