করোনা সংক্রমণ ও তার জেরে হওয়া লকডাউন- এই দুয়ের জেরে সংসারের হাল শোচনীয়। দর্জির কাজ হারিয়ে রোজগার বন্ধ বাবার। তার মধ্যে ভয়ঙ্কর উম্পুন ঝড়ে উড়ে গিয়েছে বাড়ির চাল। কিন্তু তাতেও থামানো যায়নি বাড়ির ২ বোনকে। ডায়মন্ড হারবারের সেই ২ বোন এবারে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে নিজের চেষ্টায় ভাল ফল করেছে। কিন্তু আগামী দিনে কী ভাবে তাঁদের পড়াশোনা চলবে, তা নিয়ে চিন্তায় বাবা-মাও। এই অবস্থায় সেই পরিবারের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল স্থানীয় প্রশাসন। তাঁদের সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এলেন শাসক দলের স্থানীয় নেতাও।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের বোলসিদ্ধি কালীনগর অঞ্চলের ষাটমণীষা গ্রামের ওমর শেখের দুই মেয়ে রাসনা খাতুন ও সুহানা খাতুন। গরিব পরিবার হলেও দুই মেয়ে খুবই মেধাবী ও পরিশ্রমী। শুধুমাত্র নিজেদের চেষ্টাতেই এবছর ভাল ফল করেছে তাঁরা। সুহানা মাধ্যমিকে পেয়েছে ৮০.২ শতাংশ নম্বর। অন্যদিকে দিদি রাসনা উচ্চমাধ্যমিকে পেয়েছে ৯৬.৪ শতাংশ নম্বর। দুই বোনের রেজাল্টে তাঁদের পরিবারের লোক তো বটেই, খুশি হয়েছে গোটা পাড়ার লোকই।
কিন্তু মেয়েদের এত ভাল ফলের পরেও ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় ছিলেন বাবা ওমর শেখ। অভাবের সংসারে মেয়েদের উচ্চশিক্ষা কী ভাবে হবে, তা ভেবেই কুল পাচ্ছিলেন না তিনি। ঠিক এই সময়েই সাহায্যের হাত বাড়ায় প্রশাসন। ডায়মন্ড হারবার ১ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক মিলন তীর্থ সামন্ত এগিয়ে আসেন। তাঁর সঙ্গে এগিয়ে আসেন ডায়মন্ড হারবার ১ নম্বর ব্লকের যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি গৌতম অধিকারীও। তাঁরাই ওমর শেখের বাড়ি গিয়ে রাসনা ও সুহানাকে সম্বর্ধনা দেন। একইসঙ্গে ২ বোনের পড়াশোনার জন্য আপাতত ১০ হাজার টাকার চেক তুলে দিয়ে আসেন। দু’জনেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আগামী দিনেও যাতে দু’বোনের পড়াশোনায় সবরকমের সাহায্য করবেন তাঁরা।