ব্রিটিশদের হারিয়ে মোহনবাগানের শিল্ড জয় আক্ষরিক অর্থে ঐতিহাসিক। যে ঘটনা ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনে অনুঘটকের কাজ করেছিল। সেই ম্যাচের পুঙ্খানুপুঙ্খ ধারাবিবরণী এবার রাখা হবে রাজ্যের স্কুল পাঠ্যক্রমে। সরকারি কর্তারা জানিয়েছেন, এর উদ্দেশ্য একটাই। তা হল, বাংলার ছাত্রছাত্রীদের দেশাত্মবোধ আরও বাড়ানো।
রাজ্যের মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ইতিমধ্যে বইয়ের খসড়া তৈরি করে ফেলেছে। পাঠ্যপুস্তকে থাকছে, “আইএফএ শিল্ডের ফাইনাল ম্যাচে সাহেবদের টিটকিরি হজম করতে না পেরে জ্বলে উঠেছিল গোটা মোহনবাগান। হাফ টাইমের পরে শুরু হল মোহনবাগানের মুহুর্মুহু আক্রমণ। শিবদাস ভাদুড়ী বিপক্ষ দলের গোলের সামনে একটা বল পেয়ে সজোরে গলিয়ে দিলেন গোলপোস্টের মধ্যে। গোল শোধ করল মোহনবাগান। খেলা শেষের আর মাত্র কয়েক মিনিট বাকি। মোহনবাগানের অভিলাষ ঘোষ বল ঠেলে দিলেন বিপক্ষের গোলে। তখন অসম্ভব সম্ভব হওয়ার আনন্দে উদ্বেলিত বাঙালি। আকাশে-বাতাসে শুধুই মোহনবাগানের জয়ধ্বনি। আর আকাশভরা ঘুড়িতে লেখা হল মোহনবাগানের জয়ের বার্তা। মোহনবাগানের বিজয় উৎসবে মুখরিত সমগ্র বাংলাদেশে এসেছিল অকাল দীপাবলি।”
১৯১১ সালে আইএফএ শিল্ডে ইস্ট ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টকে হারানোর পর প্রতি বছর ২৯ জুলাই বিশ্বজুড়ে মোহনবাগান দিবস পালিত হয়। বুধবারও নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করেছে মোহনবাগান ক্লাব। তবে করোনা সতর্কতায় সবই হয়েছে ভার্চুয়াল। পরাধীন ভারতে বাঙালির এই গৌরবগাথা এখনও কোনও রাজ্যের স্কুলপাঠ্যে ঢোকেনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটিশদের হারিয়ে বাঙালির শিল্ডজয়ের কাহিনী বাংলার ছাত্রছাত্রীদের অবশ্যই জানা উচিত। স্কুলশিক্ষা দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী শিক্ষাবর্ষেই মোহনবাগানের শিল্ড জয়ের কাহিনি সিলেবাসে আবশ্যিক করা হবে। ১৯১১ সালে আইএফএ শিল্ডে জয়লাভ করা মোহনবাগানের ১১ জন খেলোয়াড়ের ছবিসহ নাম থাকবে অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যে। পাশাপাশি থাকবে সেই ম্যাচের পুঙ্খানুপুঙ্খ ধারাবিবরণী।