দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন সমাজকর্মী তথা সাংবাদিক পারওয়েজ পারভেজ। মঙ্গলবার ২০১৮ সালের এক গণধর্ষণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন তিনি। গোরখপুরের দায়রা আদালত তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।
২০১৭ সালে যোগীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন পারভেজ। তখন যোগী ছিলেন গোরখপুরের সাংসদ। পারভেজের অভিযোগ ছিল, যোগী বিদ্বেষমূলক ভাষণ দিয়েছেন। তখনই বিজেপি নেতা ওয়াই ডি সিং আদালতে পাল্টা অভিযোগ করেন, যোগীকে ফাঁসানোর জন্য পারভেজ একটি বিকৃত ভিডিও দেখাচ্ছেন। ২০১৮ সালে হাইকোর্ট উত্তরপ্রদেশ সরকারকে বলে, তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী যোগীর বিরুদ্ধে তদন্ত করার দরকার নেই। পারভেজ এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান।
পারভেজ অভিযোগ করেছিলেন, যোগীর সঙ্গে বিধান পরিষদের তৎকালীন সদস্য ওয়াই ডি সিং, গোরখপুরের তৎকালীন মেয়র অঞ্জু চৌধুরি এবং বিজেপি নেতা শিবপ্রতাপ শুক্লা ২০০৭ সালে গোরখপুরে দাঙ্গা লাগিয়েছিলেন। পরে পারভেজ বলেন, আদালতে যাওয়ার পর থেকেই তাঁকে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে দাঙ্গা করা ও ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছিল। ধর্ষণের অভিযোগে তিনি জেলে ছিলেন। তাঁর উকিল সৈয়দ ফারমান নকভি বলেন, ‘গণধর্ষণের মামলায় মূল অভিযুক্ত জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। কিন্তু পারভেজ ছাড়া পাননি। যেখানে গণধর্ষণ হয়েছিল বলে দাবি করা হচ্ছে সেখানকার বাসিন্দারা বলছেন, এমন কিছু ঘটেনি।’
২০০৭ সালের দাঙ্গার তদন্তে নেমে সিআইডি জানায়, কয়েকজন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ আছে। পারভেজের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়ার পরে যথেষ্ট চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে গোরখপুরে। সরকারি কৌঁসুলি যশপাল সিং বলেছেন, ‘জেলা ও দায়রা বিচারক গোবিন্দ বল্লভ শর্মা দুই অভিযুক্ত পারওয়েজ পারভেজ ও মেহমুদ ওরফে জুম্মনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। তাঁদের দু’জনের ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। তা থেকে ৪০ হাজার টাকা দিতে বলা হয়েছে ধর্ষিতাকে।’
২০১৮ সালে ৪০ বছর বয়সী এক মহিলা পুলিশে অভিযোগ করেন, ওই বছরের ৩ জুন তিনি মেহমুদ ওরফে জুম্মন বাবা নামে এক ৬৬ বছর বয়স্ক ব্যক্তির বাড়িতে গিয়েছিলেন। নিজের পারিবারিক সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি জুম্মন বাবার পরামর্শ যান। জুম্মন বাবা ও তাঁর এক বন্ধু তাঁকে নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। সেই বন্ধুকে জুম্মন বাবা পারভেজ ভাই বলে সম্বোধন করছিলেন।