করোনা ভাইরাসই বিশ্বের ইতিহাসে ভয়ংকরতম মহামারী। এর চেয়ে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে এর আগে কখনও পড়তে হয়নি। সোমবার নির্দ্বিধায় সেকথা স্বীকার করে নিলেন হু’র ডিরেক্টর-জেনারেল টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসুস। সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, ‘এই নিয়ে ষষ্ঠবার স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা জারি করল হু। তবে নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, এই ছ’বারের মধ্যে এটাই সবচেয়ে খারাপ অবস্থা।’ টেড্রোস বলছিলেন, সংক্রমণ ছড়ানোর ৬ মাস পরেও এই ভাইরাস গতি বাড়াচ্ছে। শুধু গত ৬ সপ্তাহেই বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যাটা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে।
পাশাপাশি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে কিন্তু আন্তর্জাতিক ট্র্যাভেল বরাবরের মতো বন্ধ হতে পারে না বলে জানাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু। সব দেশকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে জানিয়েছে হু।
চীন করোনা ভাইরাসের বিপদ নিয়ে হু-কে সতর্ক করেছিল ঠিক ছ’মাস আগে। গত ৩০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে ‘পাবলিক হেলথ এমারজেন্সি’ ঘোষণা করে হু। আগামী ৩০ জুলাই করোনাকে মহামারী ঘোষণার ৬ মাস পূর্ণ হতে চলছে। এর মধ্যে বহু ঢিলেমির অভিযোগ উঠেছে। আমেরিকা অভিযোগ করেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাফিলতির জেরে করোনা আজ মহামারীর আকার নিয়েছে। আবার হু দাবি করেছে, আমেরিকা-সহ বহু দেশ তাদের দেওয়া সতর্কবার্তাকে গুরুত্ব দেয়নি। কারণ যাই হোক, করোনা আজ বিশ্বব্যাপী ত্রাস সৃষ্টি করেছে। বিশ্বজুড়ে এর কবলে পড়েছেন ১ কোটি ৬৪ লক্ষের বেশি মানুষ। প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ মানুষের।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিপদ এখনও বাকি আছে। এই মহামারী থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে, সেখানে সংক্রমণ কমছে। যেখানে মানা হচ্ছে না, সেখানে বাড়ছে। অনেক দেশ ধরেই নিয়েছিল, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে তাঁরা। সেই সব দেশেও নতুন করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। উল্লেখ্য, করোনার আগে সোয়াইন ফ্লু, জিকা ভাইরাস, পোলিও সংক্রমণ এবং দু’বার ইবোলা সংক্রমণের সময়ে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা জারি করেছিল হু। কিন্তু কোনওক্ষেত্রেই পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হয়নি।