এ যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা! একেই বিক্ষুব্ধ সচিন পাইলট এবং তাঁর অনুগামীদের ‘বিদ্রোহ’ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। এরই মধ্যে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী এবং কংগ্রেসের শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়ে আচমকাই দল বদল করে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া ৬ বিধায়কের উপর অধিকার দাবি করে হাইকোর্টে মামলা করেছেন মায়াবতী৷ আর এবার আরও ব্যাখ্যা চেয়ে গেহলটের দেওয়া প্রস্তাব ফেরত পাঠালেন রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র। যার ফলে রাজস্থানে রাজ্যপাল বনাম কংগ্রেসের সঙ্ঘাত পর্ব আরও জটিল হয়ে উঠল।
এর আগেও গেহলটের প্রস্তাব খারিজ করে তাঁকে অন্য প্রস্তাব দেওয়ার কথা বলেছিলেন রাজ্যপাল। যার ফলে রবিবার গেহলট ফের এক দফা নতুন প্রস্তাব পেশ করেন রাজ্যপালের কাছে। সেই প্রস্তাবেও বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডাকার আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এই অধিবেশন ডাকা যে জরুরি প্রস্তাবে সেই বিষয়টিও উল্লেখ করেছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী। নতুন প্রস্তাবটি খারিজ না করলেও বিষয়টি নিয়ে তিনি চিন্তাভাবনা করছেন বলেও জানান রাজ্যপাল।
কিন্তু সোমবার ছবিটা একদম বদলে যায়। গেহলটের কাছে আরও ব্যাখ্যা চেয়ে রাজ্যপাল সেই প্রস্তাব ফেরত পাঠিয়ে দেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, বার বার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বাধার সৃষ্টি করছেন রাজ্যপাল। কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘আমরা চাইছি আস্থাভোট হোক। এর জন্য আর্জিও জানানো হয়েছে রাজ্যপালকে।’ এর পরই তাঁর অভিযোগ, ‘তোতাপাখির বুলি’ বলছেন রাজ্যপাল। কেন্দ্রের অঙ্গুলিহেলনেই অধিবেশনের বিষয়টি নিয়ে উদাসীনতা দেখাচ্ছেন।
এদিকে, রাজভবনের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে রবিবারই মুখ্যসচিব রাজীব স্বরূপ, ডিজি ভূপেন্দ্র সিংহ যাদবের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র। সোমবার ফের বিক্ষোভ প্রদর্শনের আয়োজন করেছিল কংগ্রেস। যদিও পরে তা স্থগিত করে তারা। রাজ্যের শীর্ষ কর্তাদের নিয়ে রাজ্যপালের এই বৈঠককে ঘিরে জোর জল্পনা শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে। রবিবার এই বৈঠকের পরই কংগ্রেস নেতা গোবিন্দ সিংহ দোতাসরা বলেন, ‘গণতন্ত্র এবং সংবিধানকে বাঁচাতে কংগ্রেস বিক্ষোভ চালিয়ে যাবে। রাজস্থান ছাড়া গোটা দেশে রাজভবনের বাইরে এই বিক্ষোভ চলবে।’
অন্যদিকে, দলের হুইপ সত্ত্বেও পরিষদীয় বৈঠকে যোগ না দেওয়ায় বিক্ষুব্ধ সচিন পাইলট ও তাঁর অনুগামীদের সাসপেন্ড করেছেন বিধানসভার স্পিকার। এর পরে সচিন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে আদালত অন্তর্বর্তিকালীন সময়ের জন্য সচিনদের বিরুদ্ধে শাস্তি স্থগিত করে দেয়। কংগ্রেস নেতৃত্ব সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গেলে সর্বোচ্চ আদালত জানায়, শাস্তি নিয়ে সিদ্ধান্তের আগে স্পিকারের ক্ষমতা ও অধিকারের প্রশ্নটি খতিয়ে দেখতে হবে। ইতিমধ্যেই স্পিকার সিপি যোশি তাঁর আবেদন তুলে নিয়েছেন।