সদ্য হয়েছে অপারেশন। আর এই করোনার আবহে অ্যাম্বুলেন্স বা যে কোনও গাড়িতে গেলে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই রোগীকে বাড়ি পৌছে দিয়ে এলেন খোদ চিকিৎসক নিজেই। রাজ্যের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম-এর চিকিৎসক বাবলু সর্দারের এই কাজের প্রশংসা এখন সমাজের প্রতিটি কোণায়।
এসএসকেএম-এর অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের চিকিৎসক বাবলু সর্দার। আর পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার এক প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা হলেন পরিণীতা দাস। ১৪ বছরের এই কিশোরী অষ্টম শ্রেণীতে পাঠরতা। এই ছাত্রীর তলপেটে ব্যাপক যন্ত্রণা শুরু হয় বেশ কয়েক মাস ধরে। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শ মতো তাকে নিয়ে আসা হয় এস এস কে এম হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা করার পরে জানতে পারেন মেয়েটি বিরল হার্নিয়া হয়েছে। তড়িঘড়ি চিকিৎসকরা অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। এমারজেন্সি অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাক হয় রোগীর। চিকিৎসকরা প্রায় ৫০ মিনিট ধরে সিপিআর চালু রাখেন। তাতে রোগীর হৃদযন্ত্র স্বাভাবিক হয়। তারপর হয় বাকি অপারেশন।
চিকিৎসকদের মতে, রোগীকে এভাবে বাঁচিয়ে ফেরত নিয়ে আসাটা এক কথায় মিরাকেল। এর পরেই চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেন এমন রোগীকে কোনও ভাবেই ভাড়ার গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্সে করে পাঠানো ঠিক হবে না। তখনই চিকিৎসক বাবলু সর্দার দেরি না করে নিজের গাড়ি প্রস্তুত করেন। সাথে নেন সহকর্মী চিকিৎসককে। তার পরে কলকাতা থেকে ১২৫ কিমি দুরে ময়না গ্রামে বাড়ি পৌছে দিয়ে আসেন রোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের।
যদিও ডাক্তার বাবু এই কাজ করে নিজের প্রশংসা শুনতে চান না। তার কথায়, “চিকিৎসক হিসাবে আমরা তো খালি হাসি মুখ দেখতে চেয়েছিলাম। ওকে সুস্থ করে বাড়ি পৌছে দিতে পেরে আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।” চিকিৎসকদের এই ব্যবহারে আপ্লুত পরিণীতা দাসের পরিবার। এমনকী, গ্রামের লোকেরাও। মেয়ের জীবন বাঁচানো শুধু নয় এভাবে প্রতি মুহূর্তে সাহায্য পাওয়া যাবে ভাবতেই পারেননি তারা।