মধ্যপ্রদেশে ‘অপারেশন লোটাস’ চালিয়ে সরকার ফেলার পর এবার রাজস্থানেও একই তাস খেলেছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে আর চুপ থাকতে না পেরে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দেশের গণতন্ত্র বাঁচানোর আর্জি জানিয়ে চিঠি দিলেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। দলবদলে প্রসঙ্গ তুলে মোদীকে তিনি লেখেন, কয়েক দশকের প্রচেষ্টায় আমরা সকলে মিলে ভারতকে বিশ্বমঞ্চে শক্তপক্ত গণতন্ত্রের ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছি।
মোদীকে লেখা চিঠিতে কমল নাথ বলেন, ‘সংবিধান প্রণেতা বাবাসাহেব আম্বেদকর বলেন ভারতীয় সংবিধানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং মজাদার দিকটি হল এর ফেডারেল সিস্টেম। এই ফেডারেল সিস্টেমের কারণেই গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বিশ্বমঞ্চে ভারতের এক আলাদা পরিচিতি রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই ফেডারেল সিস্টেমে বারবার আঘাত আনা হচ্ছে। আক্রমণ চালানো হচ্ছে বাবা সাহেবের অনুভূতিতে, ভাবনাতে।
এরপর সরাসরি অভিযোগ তুলে কমলনাথ লেখেন, ‘ভারতের যে সমস্ত জায়গায় বিজেপি ছাড়া অন্য কোনও সরকার রয়েছে তা যেনতেন প্রকারেণ ফেলে দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে মধ্যপ্রদেশের নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেওয়া ভারতের ইতিহাসে এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র মূলক কাজ। ভাবতে অবাক লাগে একদিকে যখন মানবসমাজ করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তখন বিজেপির বরিষ্ঠ কিছু নেতা-নেত্রীরা মিলে সরকার ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হল। স্বাস্থ্যমন্ত্রী-সহ ২২ জন বিধায়ক ও মন্ত্রী মিলে বেঙ্গালুরু চলে গেল রাজ্যবাসীকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিয়ে।’
কমল নাথ আরও লেখেন, কিছু লোভী স্বার্থান্বেষী নেতাদের জন্য ২৪ মার্চ সরকার ফেলার আগে পর্যন্ত দেশের লকডাউন লাগু হতে দেওয়া হল না। এমনকি এখনো পর্যন্ত বিরোধী নেতাদের প্রলুব্ধ করে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ানোর পর্ব চলছে। আমার দুশ্চিন্তা শুধু মধ্যপ্রদেশের সরকার পড়ে যাওয়া নয়, দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এক প্রবল ভূমিকম্প এসেছে। এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে এর কেন্দ্রবিন্দু একেবারে কেন্দ্রে তৈরি হয়েছে। আশা করি, ভারতীয় গণতন্ত্রের এই অবক্ষয় ও বিশ্বাসযোগ্যতা বাঁচাতে আপনি এগিয়ে আসবেন।