বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চালাতে চায় ভারতীয় রেল। ১০৯টি রুটে ১৫১টি ট্রেন চালানোর দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিতে ইতিমধ্যেই টেন্ডার ডাকা হয়েছে। এর পাশাপাশি কর্মী সংখ্যা কমাতে এবার পদ বিলুপ্তি হতে চলেছে পূর্ব রেলে। হাওড়া, শিয়ালদহ, আসানসোল ও মালদা ডিভিশনের বিভিন্ন ক্ষেত্র মিলিয়ে প্রায় ১৮৭৫ পদ বিলুপ্তি হতে চলেছে। যা আসলে ঘুরপথে ছাঁটাই। তবে রেল আধিকারিকদের সাফাই, প্রতি বছরই বিভিন্ন বিভাগের কর্মীদের কাজের সাফল্য ও ক্ষমতা বিচার করা হয়। সেই ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কত পদ থাকবে। কোনগুলি রাখা ভীষণ জরুরি। তার ভিত্তিতেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এর সাথে কর্মী ছাঁটাইয়ের কোনও সম্পর্ক নেই।
প্রসঙ্গত, ২১ জুলাই ২০২০ তারিখে মেকানিক্যাল, ইলেক্ট্রিক্যাল ও অ্যাকাউন্টস বিভাগের মতো ‘সেফটি বিভাগের’ পাশাপাশি অপারেশন ও মেনটেন্যান্স বিভাগেও (নন-সেফটি বিভাগ) মোট ঘোষিত পদের ১৫ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে ভারতীয় রেলের চিফ পার্সোনেল অফিসারের দফতর থেকে। পূর্ব রেলের যে নির্দেশিকা প্রকাশ হয়েছে, সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৮৭৫ পোস্ট সারেন্ডার করা হবে। এক্ষেত্রে শিয়ালদহ ডিভিশনের ৩৯৬, হাওড়া ডিভিশনের ৪৬৩, আসানসোল ডিভিশনের ৩০১ ও মালদা ডিভিশনের ১৬৮ পদ রয়েছে। এছাড়া রেল পরিচালনা করতে গিয়ে দেখা গেছে লিলুয়া ওয়ার্কশপের ১৩৫, কাঁচড়াপাড়া ওয়ার্কশপের ১৪৪, জামালপুর ওয়ার্কশপের ১৩৬ পোস্ট সারেন্ডার করতে বলা হয়েছে। এছাড়া স্টোরস, প্রিন্টিং প্রেস-সহ একাধিক বিভাগের পোস্ট সারেন্ডার করতে বলা হয়েছে।
২১শে জুলাই চিফ পার্সোনেল অফিসার জে পি কুসুমাকার সই করা নির্দেশিকায় এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন আগেই ভারতীয় রেল ঘোষণা করেছিল যে সব নন সেফটি পদে দীর্ঘদিন ধরে কোনও কাজ করা হয়নি, তাদের সেই পদ বিলোপ করা হবে। বিভিন্ন রেলের জেনারেল ম্যানেজারদের এই বিষয়ে তালিকা তৈরি করে পাঠাতে বলা হয়েছিল। সেই হিসেবে ১৮৭৫ জনের তালিকা তৈরি করেছে পূর্ব রেল। রেলের এই সিদ্ধান্তে অখুশি বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনগুলি। ইস্টার্ন রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের তরফ থেকে সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ জানিয়েছেন, ‘ধীরে ধীরে রেলকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার। আমাদের আশঙ্কা ৫৫ বছরের বেশি বয়সের কর্মী বা ৩০ বছর বেশি যারা চাকরি করেছেন তাদের হয়তো আগে চাকরি যাবে।’