কিছুদিন আগেই গোটা দেশে হইচই ফেলে দিয়েছিল তামিলনাড়ুর তুতিকোরিনে পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে এক ব্যবসায়ী ও তাঁর ছেলের মৃত্যুর ঘটনা। এবার তেমনই এক ঘটনা ঘটল অন্ধ্রপ্রদেশে। গত ১৮ জুলাই এক বন্ধুর সঙ্গে বাইকে চড়ে যাচ্ছিলেন ওয়াই কিরণ কুমার। করোনা অতিমহামারীর মধ্যেও তাঁদের মুখে ছিল না মাস্ক। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। পরে মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে তিনি ভর্তি হন গুন্টুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ হেফাজতে কিরণ কুমারের মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই মামলা করা হয়েছে।
কিরণ কুমারের বাবা-মা অভিযোগ করেছেন, মাস্ক না পরার জন্য পুলিশ তাঁদের ছেলেকে মারধর করেছিল। যদিও পুলিশ বলছে, গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় ওই দলিত যুবক পালাতে চেষ্টা করেছিলেন। তখনই তিনি মাথায় আঘাত পান। প্রকাশম জেলার পুলিশ জানিয়েছে, কিরণ কুমার ও তাঁর বন্ধু সাইনি আব্রাহাম মাস্ক না পরে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তাঁরা ছিলেন মত্ত অবস্থায়। কোথাপেটা চেক পোস্টে পুলিশ কনস্টেবল রামি রেড্ডি তাঁদের থামান। তখন কিরণ কুমাররা কনস্টেবলকে মারধর করেন।
রামি রেড্ডি ওই ঘটনার কথা জানান সাব ইনস্পেকটর বিজয় কুমারকে। তিনি দু’জনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আসেন। রামি রেড্ডির অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনের বিরুদ্ধে মোটর ভেহিকেলস অ্যাক্ট এবং ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্টে মামলা করা হয়। কিরণ কুমারের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়। সাইনি আব্রাহামকে ব্রেথ অ্যানালাইজার দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। অন্যদিকে, কিরণ কুমারের বাবা মোহন রাওয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সাব ইনস্পেকটর বিজয় কুমারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
প্রকাশম জেলার পুলিশ সুপার সিদ্ধার্থ কৌশল বলেন, পুলিশ ওই যুবককে আদৌ মারধর করেনি। তারা দু’জনেই মত্ত অবস্থায় বাইক চালাচ্ছিল। চেক পোস্টে পুলিশ তাদের থামায়। তাদের পুলিশের গাড়িতে উঠতে বলা হয়।গাড়ি যখন চলতে শুরু করেছে, কিরণ কুমার লাফ দিয়ে পালাতে চেষ্টা করেন। তখনই তিনি মাথায় আঘাত পান। মাথা ছাড়া তাঁর আর কোথাও আঘাত ছিল না।
ওই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এক ডেপুটি পুলিশ সুপারকে। কিরণ কুমারের বন্ধু সাইনি আব্রাহামও ওই মামলায় সাক্ষী হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডির নির্দেশে আরও একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তার শীর্ষে আছেন গুন্টুর রেঞ্জ পুলিশের ইনস্পেকটর জেনারেল জে প্রভাকর রাও। রেড্ডি মৃত যুবকের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।