চাকরি হারানোর অবসাদের জেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ মন্ডল (৪২)। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই উঠে এসেছে। সোমবার রিজেন্ট পার্কের পূর্ব আনন্দপল্লী বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, নয়াদিল্লীতে কর্মরত ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। পেশায় জিম সামগ্রী বিক্রয়কারী সংস্থার সেলসম্যান ছিলেন। চাকরি হারানোয় দিল্লী থেকে কলকাতার বাড়িতে ফেরেন। ফেরার পর থেকেই অবসাদে ভুগছিলেন। তার জেরেই তিনি এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে পুলিশের ধারণা।
আনলক-১, আনলক-২-এ অনেক পরিষেবা চালু করায় ছাড় দেওয়া হলেও জিম সেন্টার চালু করায় অনুমতি দেওয়া হয়নি। সরকারের যুক্তি, সুরক্ষার জন্যই জিম সেন্টার চালু করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। ফলে দীর্ঘ কয়েক মাস বন্ধ থাকার কারণে সেখানে প্রয়োজনীয় সামগ্রীর বিক্রিও তলানিতে ঠেকেছে। বিক্রি না থাকায় সেলসম্যানের চাকরি থেকে রবীন্দ্রনাথকে ছাঁটাই করে তার সংস্থা। দিনদশেক আগে বাড়ি ফেরার পর থেকেই তা নিয়ে অবসাদে ভুগছিলেন তিনি।
পরিবারের এক সদস্য পুলিশকে জানিয়েছেন, দিল্লীতে চাকরি চলে যাওয়ার পর দিন দশেক আগে বাড়িতে ফেরেন রবীন্দ্রনাথ। একদিকে চাকরি হারানোর অবসাদ, পাশাপাশি বাড়ি ফেরার পর থেকে একা দিন কাটাতে হচ্ছিল তাঁকে। কারণ, তাঁর স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে লকডাউনের আগে বাঁকুড়ায় বাপেরবাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে আটকে পড়ায় রবীন্দ্রনাথ বাড়ি ফেরার পরেও কলকাতায় ফিরতে পারেনি তাঁরা। ফলে বাড়িতে ফেরার পর থেকে একাই থাকতে হচ্ছিল রবীন্দ্রনাথকে। অবসাদ ও একাকিত্ব তাকে গ্রাস করাতেই আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পুলিশ মনে করছে।
এদিকে, আনলক-১ শুরু হওয়ার পর থেকেই বহু পরিষেবা চালু করা হলেও কেন জিম সেন্টারগুলো চালু করতে দেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে জিম সেন্টারের মালিক ও কর্মীরা। সরকারের কাছে তারা বারবার আবেদন জানিয়েছে, সবরকম সুরক্ষা বিধি মেনেই তারা জিম সেন্টার চালু করতে রাজি। জিম সেন্টার গুলি চালু না করলে বহু মানুষ যেমন কর্মহীন হয়ে পড়বে, পাশাপাশি আর্থিক সংকটে ভুগতে হচ্ছে জিম সেন্টারের মালিকদেরও। যদিও এখনও পর্যন্ত সরকারের তরফে কোনও সবুজসংকেত মেলেনি জিম সেন্টার চালু করার বিষয়ে।