সিইএসসি-র পাঠানো বিল নিয়ে এ মাসে তুমুল হইচই শুরু হয়েছিল গোটা কলকাতা জুড়ে। অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিল পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করতে শুরু করেছিলেন প্রায় সব শ্রেণির গ্রাহক। নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্তরা শুধু নন, এই বিল নিয়ে ফিল্মস্টার থেকে মন্ত্রী পর্যন্ত সকলেই বিস্ময় প্রকাশ করছিলেন। যার ফলে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল পাঠানো হয়নি বা ন্যায্য বিলই পাঠানো হয়েছে বলে বার বার দাবি করে এসেও পিছু হঠতে বাধ্য হল সিইএসসি। এই মাসের বিল থেকে শুধু মাত্র জুনে ব্যবহার করা বিদ্যুতের খরচই দিতে হবে। জুন মাসের বিলে এপ্রিল ও মে মাসের যে টাকা যুক্ত করা হয়েছে তা এখন দিতে হবে না। এমনটাই জানানো হল বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থার তরফে। যার ফলে বোঝা কমল সিইএসসি গ্রাহকদের ওপর থেকে ।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসে ইলেকট্রিক বিল পেয়ে অনেক সিইএসসি গ্রাহকেরই মাথায় হাত পড়েছে। বিপুল পরিমাণ টাকার বিল পাঠিয়েছে সিইএসসি। এনিয়ে গত ক’দিন ধরেই প্রবল চাপের মধ্যে সংস্থা। তাদের যুক্তি ছিল জুন মাসের বিলের মধ্যে এপ্রিল ও মে মাসের বিলের অংশও যুক্ত করা হয়েছে। ওই সময়ে লকডাউন চলায় মিটার রিডিং হয়নি বলে অনেকের কাছেই কম টাকার বিল গিয়েছিল। এই যুক্তি দেখালেও চাপ একটুও কমেনি সিইএসসির ওপর থেকে। অবশেষে রবিবার রাতে সিইএসসি টুইট করে জানাল, এখন পুরনো মাসের টাকা দিতে হবে না। শুধু মাত্র জুন মাসে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়েছে তার বিলই মেটাতে হবে।
তবে এর জন্য নতুন বিল আসবে কিনা কিংবা এলে তা কবে আসবে সে ব্যাপারে এখন কিছুই জানানো হয়নি। সিইএসসির দাবি অনুযায়ী আগের দু’মাসের বকেয়া টাকা কীভাবে গ্রাহকদের থেকে নেওয়া হবে তা নিয়েও কিছু বলা হয়নি। একই সঙ্গে সিইএসসি জানিয়েছে এই সম্পর্কে খুব শীঘ্রই গ্রাহকদের বিস্তারিত জানানো হবে। তবে একটা বিষয়ে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, সর্বশেষ যে বিল পাঠানো হয়েছে তার ডিউ ডেট অর্থাৎ বিল জমা করার সময়সীমা বাড়ানো হবে। তবে এটা শুধুই ডোমেস্টিক কানেকশনের জন্য। বাড়তি বিদ্যুতের বিল নিয়ে টানাপোড়েন কম হয়নি। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এনিয়ে লিখতে শুরু করেন। তাঁরা বিলের অঙ্ক জানিয়ে প্রতিকার চান।
পরিস্থিতি আঁচ করে তড়িঘড়ি বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সিইএসসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পরে সিইএসসির এমডি (ডিস্ট্রিবিউশন) দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এক ভিডিও বার্তায় গ্রাহকদের জানান, গ্রাহকেরা এখন বিলের ৫০ শতাংশ দিয়ে, পরের দু’মাসে ২৫ শতাংশ করে দিতে পারবেন। তবে তা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হলে নতুন সিদ্ধান্ত জানাল কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা। সিইএসসির এই সিদ্ধান্ত শোনার পরে বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, ‘সাধারণ মানুষের অভিযোগ শুনে প্রথম থেকেই সিইএসসি-র ওপর চাপ দিচ্ছিলাম। আমি ওদের যুক্তি খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাতে বলেছিলাম। আগামীকাল একটি বৈঠকেরও কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সিইএসসি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে আমি খুশি।’