ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে শুরু হয়েছে নতুন নিয়ম। যে মাঠে ম্যাচ চলবে, সেই স্টেডিয়ামের ভিতরে এক বার ঢুকে গেলে আর বাইরে যাওয়া চলবে না। স্টেডিয়ামের ভিতরেই হোটেল। সেখানেই থাকবেন ক্রিকেটারেরা, ধারাভাষ্যকারের দল, কর্মরত প্রত্যেকে। তাই ক্রিকেটের অভিধানে যোগ হয়েছে নতুন শব্দ— ‘বায়ো বাবল এনভায়রনমেন্ট’।
ইংল্যান্ডের মিডিয়া ম্যানেজার ড্যানি রিউবেনের থেকে জানা গেল, ভিতরে আরও সব অদ্ভুত নিয়ম মেনে চলতে হচ্ছে দু’দলের ক্রিকেটারদের। স্টেডিয়ামেই অবস্থিত হোটেলে আছেন দু’দলের ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার, এক কথায় মাঠে আসা সকলে। মোট ৩০০ জন রয়েছেন সেই হোটেলে। ১৫০ জনকে দেওয়া হয়েছে ব্যক্তিগত রুম। বাকি ১৫০ জন থাকছেন ডর্মিটরি ও ডাবল স্যুটে।
ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার অথবা সাংবাদিকদের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ডে লাগানো রয়েছে ‘মাইক্রো চিপ’। তাতে জিপিএস বসানো থাকছে। ট্রেনিং ও ম্যাচ চলাকালীন অথবা রুমের মধ্যে থাকাকালীন সেই কার্ড খুলে রাখা যাবে। রুমের বাইরে পা দিলেই গলায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে কার্ড। ড্যানি বলছিলেন, ‘‘ধরুন কোনও ক্রিকেটারের করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ এল। সে ক্ষেত্রে জিপিএস ট্র্যাক করে দেখা যাবে, সেই ক্রিকেটারের সংস্পর্শে কারা এসেছিল। সেই অনুযায়ী তাদেরও পরীক্ষা করা হবে।’’
হোটেলের লিফ্টে কনুই দিয়ে বোতাম টিপতে হবে। আঙুল ব্যবহার করলে সেন্সরই কাজ করবে না। লিফ্টের ভিতরে দু’জনে যদি একে অন্যের মুখোমুখি দাঁড়ায়, সে ক্ষেত্রেও অ্যালার্ম বেজে উঠবে। কারও কাছে রুমের চাবি নেই। দরজায় নেই হ্যান্ডল। হোটেলের নিজস্ব একটি অ্যাপ আছে। তার মাধ্যমেই দরজা খোলা ও বন্ধ করা যায়। ‘মাস্ক’ না পরে রুমের বাইরে পর্যন্ত যাওয়া নিষেধ। ক্রিকেটারেরা একে অন্যের রুমে যেতে পারবেন? ড্যানি বললেন, ‘‘একে অন্যের রুমে যেতে পারবে, কিন্তু তিন জনের বেশি এক জায়গায় থাকা যাবে না।
একসঙ্গে বসে ম্যাচ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে-করতে নৈশভোজ উপভোগ করার রীতি এখন অতীত। ব্রেকফাস্টের আগে প্রত্যেকের টেবলে দেওয়া হচ্ছে একটি করে ‘হেল্থ চার্ট’। সেখানে বিভিন্ন শারীরিক দুর্বলতার উল্লেখ করা আছে। ক্রিকেটারেরা যদি মনে করেন, তাঁর জ্বর-জ্বর লাগছে অথবা মাথা যন্ত্রণা করছে, সে ক্ষেত্রে সেই ‘হেল্থ চার্টে’ দাগ দিতে হবে। পাশেই থার্মাল চেক-আপ মেশিন। প্রত্যেককে নিজেদের তাপমাত্রা মেপে লিখে দিতে হবে। করোনা থেকে সচেতন থাকার জন্য এই সমস্ত বিধি নিষেধ মেনে চলতে হবে।