ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে প্রথম বল পড়ার আগেই হুলস্থুল বাঁধিয়ে দিলেন জোফ্রা আর্চার। করোনা সংক্রমণ রুখতে তৈরি কঠোর সুরক্ষা বলয়ের নিয়ম ভেঙে তিনি চলে গিয়েছিলেন বাড়িতে। ইংল্যান্ডের একটি ট্যাবলয়েডের দাবি, সাসেক্সে বান্ধবী ড্রুয়ানা বাটলারের সঙ্গে দেখা করতে ছুটেছিলেন ইংল্যান্ডের পেস বোলার। অথচ, করোনার সময়ে হওয়া টেস্ট সিরিজে নিয়ম করা হয়েছে, কোনও ভাবেই কেউ দলের বলয় ছেড়ে অন্যত্র যেতে পারবেন না।
সাউদাম্পটনে প্রথম টেস্ট খেলার পরে গত সোমবার সেখান থেকে ম্যাঞ্চেস্টার রওনা হন ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারেরা। নিজেদের গাড়ি করে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। শর্ত ছিল, কেউ অন্য কোথাও যাবেন না, বাইরের কারও সঙ্গে দেখা করবেন না বা কাউকে তাঁদের কাছে আসতেও দেবেন না। সোজা সাউদাম্পটন থেকে যাবেন ম্যাঞ্চেস্টারে। আর্চার এই নিয়ম ভেঙে গাড়ি ঘুরিয়ে হোভে নিজের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। তবে অন্য আরেক সূত্রের খবর তিনি বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন।
ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের একটি করে ‘জিপিএস ট্র্যাকার’ দেওয়া হয়েছে। যার সাহায্যে তাঁদের গতিবিধির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও বুধবার রাতের আগে ইংল্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্ট জানতে পারেনি, আর্চার নিয়ম ভেঙেছেন। বুধবার বিকেলে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের তরফে যে ১৩ জনের দল ঘোষণা করা হয়, তাতে আর্চারের নাম ছিল। রাতের দিকে ঘটনার কথা স্বীকার করেন আর্চার। টেস্ট থেকে বাদ দেওয়ার পাশাপাশি, হোটেলে নিজের রুমে তাঁকে পাঁচ দিন নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে। দু’বার তাঁর করোনা পরীক্ষা হবে। যদি দু’বার নেগেটিভ আসে তাহলেই তিনি ছাড়া পাবেন।
অবশ্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন আর্চার। বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘‘আমি শুধু নিজেকে নয়, পুরো দল এবং ম্যানেজমেন্টকেও বিপদের মধ্যে ফেলেছি। শাস্তির আদেশ অবশ্যই গ্রহণ করছি এবং নিয়ম ভাঙার জন্য সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। টেস্টে খেলতে না পারা আমাকে যন্ত্রণা দিচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে, দু’টো দলকেই সমস্যায় ফেললাম। আবার বলছি, আমি দুঃখিত।’’
ক্রিকেট ইতিহাসে শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং তাঁর জেরে শাস্তি পাওয়ার নজির কম নেই। মাঠের মধ্যে আগ্রাসী আচরণ থেকে শুরু করে পানশালায় মারপিট— নানা ধরনের কাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়েছেন ক্রিকেটাররা। করোনা নিয়মবিধি তৈরি হওয়ার দিন পনেরোর মধ্যে তা ভেঙে নতুন ‘কীর্তি’ গড়ে ফেললেন আর্চার।