স্ত্রী ও দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এক ব্যক্তি। চিৎকার করে দাবি করছেন, তাঁর করোনা হয়েছে। কিন্তু শহরের কোনও হাসপাতালে ঘুরে কোনও বেড পাননি তিনি। ফলে ভর্তি হতে পারেননি কোথাও, শুরু হয়নি চিকিৎসাও। এমনই নাটকীয় দৃশ্য দেখা গেল বেঙ্গালুরুতে, মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার বাসভবনের সামনে।
ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই নেটিজেনরা চমকে উঠেছেন। ভিডিওয় বলতে শোনা গেছে, ওই ভদ্রলোক চিৎকার করছেন, ‘আমি খুব অসুস্থ। আমার ছেলেরও জ্বর এসেছে। আমায় বলা হয়েছে আমি কোভিড পজিটিভ। কিন্তু আমি কোথাও কোনও বেড পাইনি।’
যদিও মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা এই অভিযোগ স্বীকার করেননি। তাঁর দাবি, ওই ভদ্রলোক কোনও হাসপাতালেই যাননি, সোজা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে এসে গেছেন। তিনি বলেন, ‘ওই ব্যক্তি হাসপাতালে বেডের সন্ধান করেননি। এখানে এসে জানিয়েছেন ভর্তির কথা। কারণ তাঁর কাছে টাকা নেই।’
এই ঘটনার পরে একটি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে ওই ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তবে বাস্তব চিত্র বলছে, কর্নাটকে যেভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে, তাতে হাসপাতালগুলিতে বেড পেতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। বহু রোগীকেই কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট হাতে নিয়েও দোরে দোরে ঘুরতে হচ্ছে।
দেশজুড়ে করোনা আক্রান্তের নিরিখে ইতিমধ্যেই গুজরাতকে ছাপিয়ে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে কর্নাটক। মঙ্গলবার থেকে নতুন করে লকডাউনও শুরু হয়েছে এই রাজ্যের কিছু এলাকায়। এর মধ্যে কর্নাটক সরকারের জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বার থেকে বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড ১৯ রোগীর জন্য ক’টি বেড শূন্য রয়েছে, তার নিত্য দিনের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। এর আগে কর্নাটক সরকারের ২৩ জুনের বিজ্ঞপ্তিতে বেসরকারি হাসপাতালগুলির উদ্দেশ্যে বলা হয়, প্রত্যেক বেসরকারি হাসপাতালকে মোট শয্যা সংখ্যার ৫০ শতাংশ কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য বরাদ্দ করতে হবে।
কিন্তু তার পরেও রোগীর পরিজনের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠছিল, হাসপাতালে বেড থাকা সত্ত্বে করোনা-রোগীকে ফিরিয়ে দিচ্ছে হাসপাতাল। গতকাল মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পার বাড়ির সামনে চিৎকার করে অভিযোগ তোলা ব্যক্তিও একই দাবি করেছিলেন। এবার খালি বেডের পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হলে পরিস্থিতি বদলায় কিনা, সেটাই দেখার।