সরকারি জমি থেকে উৎখাত করতে গিয়ে দলিত দম্পতির উপর ‘অকথ্য’ অত্যাচার পুলিশের। তিন শিশুর সামনেই বাবা-মাকে বেধড়ক মারধর। জমির ফসল ছেড়ে দেওয়ার থেকে মরে যাওয়াটাই শ্রেয় মনে করেছেন তাঁরা। তাই পুলিশের সামনেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই দলিত দম্পতি। বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের গুণার এই ভিডিও ভাইরাল হতেই আঁতকে উঠছেন নেটিজেনরা।
গুণা শহরের ওই এলাকায় বহু বছর ধরেই বাস করেন রামকুমার আহিরওয়ার এবং তাঁর স্ত্রী সাবিত্রী আহিরওয়ার। কিন্তু যে জমিতে তাঁরা বাস করতেন সেটি ছিল সরকারি জমি। ২০১৮ সাল থেকেই ২০ বিঘা প্লটটিতে সরকারি মডেল কলেজ তৈরির কাজ চলছে। প্রশাসন আগেই রামকুমারকে তাঁর পরিবার নিয়ে ওই এলাকা খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তাঁরা তাঁদের শেষ সম্বল ছেড়ে যেতে চাননি। ওই সরকারি জমিতে চাষবাস করেই তাঁদের পেট চলত। তিন সন্তান নিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই বলতেও ওই সরকারি জমির কুঁড়ে ঘরটিই। তাই মঙ্গলবার পুলিশ তাঁদের জমি থেকে উৎখাত করতে এলে বাধা দেয় ওই দম্পতি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বাধা দিতে গেলে রামকুমার এবং সাবিত্রী দেবীকে বেধড়ক মারধর করে পুলিশ। মারের চোটে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ওই দম্পতি। পাশেই তাঁদের তিন সন্তান এই দৃশ্য দেখছিল। ভয়ে কাঁটা হয়ে যায় তাঁরা। পুলিশের অত্যাচারের মুখে বাধ্য হয়ে ওই দলিত দম্পতি বিষপান করে। প্রথমে হাসপাতালেও যেতে চাইছিলেন না তাঁরা। পরে পুলিশই তাঁদের জোর করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।আপাতত তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল।
এই ভিডিও ভাইরাল হতেই মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণে নেমেছে কংগ্রেস। খোদ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এই ভিডিওটি শেয়ার করে লিখছেন, ‘আমাদের লড়াইটা এই মানসিকতা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধেই।’ সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের অভিযোগ, রাজ্যে জঙ্গলরাজ চালাচ্ছে বিজেপি। এভাবে জোর জবরদস্তি না করে, পুলিশের উচিত ছিল আইনি পথে সমস্যার সমাধান করা। সরব হন অন্য কংগ্রেস নেতারাও। চাপে পড়ে ওই পুলিশকর্মীদের সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। ঘটনার পূর্ণ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।