এমনটা যে হতে চলেছে, সে আশঙ্কা গোড়াতেই করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। বিশ্বজুড়ে করোনা সংকটের প্রথম ছ-মাস অতিবাহিত হওয়ার পর, রাষ্ট্রপুঞ্জের এক রিপোর্ট জানান দিচ্ছে, আশঙ্কা অমূলক ছিল না। করোনা সংক্রমণ অতিমারীর আকার নেওয়ার সঙ্গেই বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা। পেটে খিদে নিয়ে বেঁচে রয়েছেন বিশ্বের ৬৯ কোটি মানুষ।
বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা। কোভিড লকডাউন এই মন্দাকে খারাপ থেকে খারাপতর জায়গায় নিয়ে গিয়েছে। লোকের হাতে কাজ নেই। তার মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের চড়াদাম। দু-বেলা দু-মুঠো অন্নের সংস্থান করতে বহু মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। জিনিসপত্র চলে যাচ্ছে সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এর মধ্যে আবার জলবায়ুর পরিবর্তনও জোর ধাক্কা দিয়েছে। চাষবাস, ফসলের ক্ষতি। সবমিলিয়ে যা পরিস্থিতি, পুষ্টিকর খাবার এখন অনেকের কাছেই খুব ব্যয়বহুল!
রাষ্ট্রপুঞ্জের এক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টটি যদিও নির্দিষ্ট করোনো-কালের ভিত্তিতে তৈরি হয়নি। রাষ্ট্রপুঞ্জের বার্ষিক প্রতিবেদন। তাতে কী হল! করোনা যে মানুষের মুখের খাবার কেড়ে নিচ্ছে, তা কিন্তু রিপোর্টেই স্পষ্ট।
বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রতি ন’জনে একজন ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছেন। করোনাভাইরাসের মহামারী পরিস্থিতি আরও সঙ্গিন করে তুলছে। আক্ষরিক অর্থেই মড়ার উপর এ যেন খাঁড়ার ঘা!
বার্ষিক রিপোর্টে ধরা পড়ে, বিশ্বের ৬৯০ মিলিয়ন বা ৬৯ কোটি মানুষ ক্ষুধার্ত। শতাংশের হিসেবে, দুনিয়ার ৮.৯ শতাংশ মানুষ পেটে খিদে নিয়ে বেঁচে রয়েছে। শুধু ২০১৯-এর একটা গোটা বছরে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১ কোটি! বিগত পাঁচ বছরের হিসেব ধরলে সংখ্যাটা বেড়েছে ৬ কোটি।
দ্য স্টেট অফ ফ্লাড সিকিওরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশনের বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী, অর্ধহার, অনাহারে থাকা মানুষের সংখ্যা দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে কমতে কমতে ২০১৪ সাল থেকে আবার উলটো পথ ধরছে। ধীরে ধীরে ফের বাড়ছে খিদে নিয়ে দিনগুজরান করা মানুষের সংখ্যা।