করোনার হানায় থরহরিকম্প গোটা দেশ। রোজই যেমন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, তেমনি আসছে বহু প্রাণহানির খবরও। তবে মহারাষ্ট্র, দিল্লী, গুজরাতের মত রাজ্যগুলিতে প্রতিদিন এত সংক্রমণ, মৃত্যুর মধ্যেও আশার আলো বাংলায়। এ রাজ্যের পাঁচ-পাঁচটি জেলায় এখনও কোভিডের কারণে কারও প্রাণহানি হয়নি। হ্যাঁ, মমতার বাংলার পাঁচটি জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্য।
শুক্রবার সন্ধেবেলা স্বাস্থ্য ভবন যে বুলেটিন প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা গিয়েছে রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১১৯৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী কোভিডে আক্রান্ত হয়ে বাংলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৮৮০ জন। কিন্তু ইতিবাচক এই যে, উত্তরবঙ্গের দুই জেলা ও জঙ্গলমহলের তিন জেলায় কোভিডে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি।
উত্তর বাংলার আলিপুর দুয়ার ও কোচবিহার এবং রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রামে কারও প্রাণহানি হয়নি। শুধু তাই নয়, এই পাঁচ জেলায় সুস্থ হয়ে ওঠার হারও অত্যন্ত আশাব্যবঞ্জক। বৃহস্পতিবারের বুলেটিন অনুযায়ী ঝাড়গ্রামের ছবিটা সবচেয়ে ভাল। এই জেলায় ১০০ শতাংশ রোগীই সেরে উঠেছেন। এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ জন। সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরে গিয়েছেন ২৫ জন। শুক্রবারের সর্বশেষ বুলেটিন বলছে, ঝাড়গ্রামে করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা শূন্য।
আলিপুরদুয়ার জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা সংখ্যা ১৯৩ জন। তার মধ্যে ১৮৬ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। মাত্র সাত জনের শরীরে করোনাভাইরাস সক্রিয় রয়েছে। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এই সাত জনের কারও অবস্থাই গুরুতর নয়। দু’তিন জনকে আজ-কালের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। বাঁকুড়া জেলায় কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০৩ জন। যার মধ্যে ইতিমধ্যেই ২৪৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ৫৭ জনের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে।
আবার পুরুলিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১১৫ জন। ৯৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। চিকিৎসা চলছে ২২ জনের। তা ছাড়া বাংলায় এমন তিনটি জেলা রয়েছে, যে জেলাগুলিতে মাত্র এক জন করে কোভিড আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। সেগুলি হল, কালিম্পং, উত্তর দিনাজপুর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর। তবে চিকিৎসক মহলের অনেকেই বলছেন, এখনও পর্যন্ত বাংলার পাঁচ জেলার মৃত্যুহীন থাকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁদের মতে, এই পরিসংখ্যান একদিকে যেমন অন্য জেলাগুলির আক্রান্ত ও চিকিৎসকদেরও অক্সিজেন জোগাবে, তেমনি গোটা দেশের সামনে করোনা মোকাবিলায় বাংলার সাফল্যকে তুলে ধরবে।