গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যেখানে বিশ্ববাজারে ক্রমশ কমছে পেট্রাপণ্যের দাম, সেখানে ভারতে রোজই বাড়ছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ছে। মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে রান্নার গ্যাসেরও। এছাড়াও রেলে কমছে কর্মী সংখ্যা, এমনকি বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বেশ কিছু যাত্রীবাহী ট্রেন। এই এতগুলো ইস্যু নিয়েই এবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের শীর্ষনেতাদের সামনে থেকে প্রতিবাদে সামিল হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতই বুধবার কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পথে নেমে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালেন বাইপাস লাগোয়া শহিদ স্মৃতি কলোনির মানুষরা।
এদিন তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যার অভিযোগ জানিয়েছেন যে, “লকডাউনে আমরা তৃণমূলের তরফ থেকে এলাকার গরিব মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিলি করেছি। কিন্তু গরিব মানুষ এখন চলবেন কী ভাবে? কেরোসিন ও গ্যাসের দাম যেভাবে বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার, তাতে তাঁরা খাবেন কী করে?” একইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, “গ্রামীণ যোজনা সুবিধা অনেকেই পান না। শহরের গরিবদের জন্যে যে প্রকল্প আছে, তা থেকেও বহু মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন।” এদিন কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তাই কাঠের উনুনে রান্না করে প্রতীকী প্রতিবাদও করেন তাঁরা।
এদিনের ওই প্রতিবাদে মানুষের হাতে ছিল বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড। তাতে কোথাও লেখা ছিল, “গ্যাসের দামে আগুন ঝরে, কাঠের জ্বালে উনুন জ্বলে”, কোনওটাতে আবার লেখা “আচ্ছে দিনের দারুণ গুণ, পেট্রোল-ডিজেলে লাগল আগুন”। আবার অন্য একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা, “মরার উপর মারছ খাঁড়া, পেট্রোল-ডিজেলের দাম লাগামছাড়া, মোদী তুমি লক্ষ্মীছাড়া”।
উল্লেখ্য, নিজের ওয়ার্ডে অনন্যার কাজকে বরাবরই তারিফ করে এসেছে স্থানীয় মানুষরা। রাজ্যের প্রথম করোনার পজিটিভ রোগীর সন্ধান মিলেছিল তাঁর ওয়ার্ডেই। ফলে করোনা পর্বের শুরুতেই তাঁর কাঁধে চেপে বসেছিল গুরুদায়িত্ব। সাবানের পাউচ আর থামার্ল চেকিংয়ের সুবিধা নিয়ে তিনি এই ৩ মাসে পৌঁছে গিয়েছিলেন নিজের ওয়ার্ডের প্রতিটা ঘরে। গোটা লকডাউন পর্বে ওয়ার্ডের প্রায় ২০ হাজার মানুষের হাতে তিনি তুলে দিচ্ছিলেন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
এদিকে, বাইপাস সংলগ্ন তাঁর ওয়ার্ডে হাসপাতালের কমতি নেই। ফলে সেইসমস্ত হাসপাতালগুলির ওপরও তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হচ্ছিল তাঁকে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি প্রতিবাদেও নামলেন এই শাসক নেত্রী। কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিন-তিনটি নির্বাচন দক্ষভাবে পরিচালনা করে নিজের এলাকা থেকে লিড এনে দিয়েছেন দলকে। দলনেত্রীর অগাধ ভরসা জন্মেছে তাঁর উপর। কিন্তু জানেন, শেষ কথা বলবে মানুষই। তাই মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ তাঁর আটকে থাকছে না।