গ্যাংস্টার বিকাশ দুবের বাড়িতে যে পুলিশ হানা দেবে এ খবর তার কাছে পৌঁছে দিয়েছিল পুলিশই। এই তথ্য জানার পর থেকেই ঠিক কোন কোন পুলিশকর্মী বিকাশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন তা জানতে তদন্ত শুরু করেছিল কানপুর পুলিশ। দেখা গিয়েছে, অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কমপক্ষে ২০০ জনের বিরুদ্ধে বিকাশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনা সামনে আসতেই ফের মুখ পুড়ল যোগী রাজ্যের।
ইতিমধ্যেই ১০ জন পুলিশকর্মী কানপুর এনকাউন্টারের ঘটনায় সাসপেন্ড হয়েছেন। তাঁর মধ্যে রয়েছেন চৌবেপুর থানার স্টেশন অফিসার বিনয় তিওয়ারি। বিকাশের খোঁজ পেতে তাঁকে ইতিমধ্যেই জেরা করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এসটিএফ। অভিযোগ, ঘটনার দিন এনকাউন্টারের মাঝপথেই ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে এসেছিলেন তিনি।
ইন্সপেক্টর কে কে শর্মা এই ঘটনার তদন্ত করছেন। তিনি জানিয়েছেন, এনকাউন্টারের আগে পুলিশকে ফোনে হুমকি দিয়েছিল বিকাশ। বলেছিল, বাড়িতে হানা দিলে বিকারু গ্রামে অনেক লাশ পড়বে। ইন্সপেক্টর শর্মা আরও জানিয়েছেন, বিকাশকে খবর পাচারের সন্দেহে চৌবেপুর থানার স্টেশন অফিসার বিনয় তিওয়ারি ছাড়াও সাব-ইন্সপেক্টর কুনওয়ার পাল এবং কৃষ্ণ কুমার শর্মা এবং কনস্টেবল রাজীবকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁদের জেরা করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিকাশের বাড়িতে পুলিশি অভিযানের আগের দিন বিকরু গ্রামে গ্যাংস্টারের বাড়িতে গিয়েছিলেন বিনয় তিওয়ারি। তদন্তের স্বার্থেই নাকি কিছু কথাবার্তা বলতে গিয়েছিলেন তিনি। তবে শোনা গিয়েছে, সেদিন নাকি বিনয়কে মারধর করে বিকাশের লোকেরা।
পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া বিকাশ দুবের খাস লোক দয়াশঙ্কর অগ্নিহোত্রী জেরায় জানিয়েছে, ঘটনার দিন পুলিশ আসার খানিক্ষণ আগে বিকাশের কাছে লোকাল থানা থেকে ফোন এসেছিল। সেই ফোনেই উত্তরপ্রদেশের কুখ্যাত গ্যাংস্টারকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। বলা হয়, কানপুরের বিকরু গ্রামে তার সাতমহলা বাড়িতে হানা দেবে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশেষ টিম। খবর পেয়েই নিজের দলে জনা তিরিশ লোককে খবর দিয়ে বাড়িতে জড়ো করে বিকাশ। এরাই নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে পুলিশের উপর।
কানপুরের আইজি মোহিত আগরওয়াল জানিয়েছেন, সন্দেহের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চৌবেপুর থানা। এমনকি এই থানায় আগে পোস্টিং ছিলেন এমন পুলিশকর্মীদের উপরেও নজর রাখছে এসটিএফ। পুলিশের অনুমান, এঁদের মধ্যে অনেকেই হয় বিকাশকে সাহায্য করেন বা করতেন কিংবা গ্যাংস্টারের থেকে সুবিধা পেতেন বা এখনও পান। আইজি জানিয়েছেন, চৌবেপুর ছাড়াও বিহাউর, কাকওয়ান এবং শিবরাজপুর এইসব থানার বর্তমান এবং প্রাক্তন পুলিশকর্মীদের উপর নজর রাখা হচ্ছে। তাঁদের কল রেকর্ডও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।