বাংলায় উম্পুনে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে প্রথম থেকেই সচেষ্ট রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে অনেকেই মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। তবে তালিকা প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, বিজেপি পরিচালিত বেশ কিছু গ্রামপঞ্চায়েতে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে তৃণমূল। এবার উম্পুনে ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মীয়-পরিজন, অনুগামীদের পাইয়ে দিয়ে জনরোষের মুখে ২ জেলার গ্রামপঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্যরা। সোমবার প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা ব্লকের কনিয়াড়া ২ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। প্ল্যাকার্ডের পাশাপাশি ঝাঁটা হাতে আওয়াজ তোলেন মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, এই পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্যদের পাকা বাড়িওয়ালা আত্মীয়রা ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছে।
বাগদা বিধানসভা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির চেয়ারম্যান তরুণ ঘোষের অভিযোগ, ‘প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র মানুষ বঞ্চিত। অথচ পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্যরা তাঁদের প্রায় ৪০ জন আত্মীয়কে সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দিয়েছেন। যাঁরা সকলেই অবস্থাপন্ন। আমাদের দাবি, অবিলম্বে তাঁদের ওই টাকা ফেরত দিতে হবে।’ পরে তৃণমূলের ৪ সদস্যদের এক প্রতিনিধি দল প্রধানের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের চাপের মুখে পঞ্চায়েত প্রধান অনামিকা বিশ্বাস অনিয়মের কথা স্বীকার করে নেন। পাশাপাশি পাকা বাড়ি আছে, এমন যেসব মানুষ ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন, তাঁদের টাকা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রধানের সাফাই, ‘তাড়াহুড়োতে কিছু ভুল হয়ে গেছে। সেগুলি সংশোধন করে নতুন তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে দ্রুত ক্ষতিপূরণের টাকা পান, তার ব্যবস্থা করা হবে।’
এদিকে, এদিনই হুগলির রিষড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য বেবি বিশ্বাসের বাড়ি ঘেরাও করে স্থানীয় গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, এলাকার ১০০ দিনের কাজের সুপারভাইজার ওই সদস্য তাঁর ২ অনুগামীকে বেআইনিভাবে উম্পুনের ক্ষতিপূরণ পাইয়ে দিয়েছেন। বিজেপির সক্রিয় সমর্থক ওই দু’জনের বাড়ির সামান্য ক্ষতিও হয়নি। জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবের অভিযোগ, ‘বিজেপি সদস্য নিজেই তাঁর ঘনিষ্ঠদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। পাণ্ডুয়াতেও একই ঘটনা ঘটেছে। সেখানেও ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে বিজেপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ক্ষতিপূরণ নিয়ে দলে দুর্নীতিতে জড়িতদের রেয়াত করেনি তৃণমূল। এখন বিজেপির উচিত, ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।’ স্থানীয় সমীর সরকারের অভিযোগ, ওই এলাকায় প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা কোনও ক্ষতিপূরণ পায়নি। অভিযুক্ত ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে ১০০ দিনের কাজেও অনিয়মের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। গ্রামবাসীদের চাপে সেই অভিযোগ তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন।