হাসপাতালের বিল জমা দিতে না পারায় এক শ্রমিককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল হাসপাতাল কর্মীদের বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দী হয়েছে সিসিটিভিতে।
বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে। জানা গিয়েছে, সুলতান খান নামের ওই ৪৪ বছরের শ্রমিক সম্প্রতি একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভাইপো চমন। তিনি জানিয়েছেন, কয়েক দিন ধরে সুলতানের প্রস্রাবের সমস্যা হচ্ছিল। তাই ডাক্তার দেখাতে যান তিনি। চমন বলেন, ‘আমরা প্রথমে জিজ্ঞাসা করি চিকিৎসা করাতে কত খরচ হবে। তাতে হাসপাতাল জানায়, আল্ট্রাসাউন্ড করার পরে বলতে পারা যাবে। কিন্তু আল্ট্রাসাউন্ডের আগেই ওষুধের জন্য আমাদের কাছে ৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়। সেটা আমরা দিয়ে দিই। কয়েক ঘণ্টা পরে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, প্রতিদিনের বেড ভাড়া বাবদ ৪ হাজার টাকা দিতে হবে।’
এত টাকা তাঁদের কাছে ছিল না বলেই জানিয়েছেন চমন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে অত টাকা ছিল না। তাই আমরা হাসপাতালকে বলি কাকাকে ছেড়ে দিতে। কিন্তু হাসপাতাল কাকাকে ছেড়ে দেওয়ার পরেও হাসপাতালের কর্মীরা আমাদের উপর নজর রাখে। আমাদের ধরে ৪ হাজার টাকা চাওয়া হয়। আমি বলি, কাকার অবস্থা ভাল নয়। তাই আমি ওদের কাছে হাতজোড় করে আমাদের ছেড়ে দিতে বলি। তাতে ওরা আমাদের মারতে থাকে।’ এই মারের চোটেই সুলতানের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ চমনের।
অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের তরফে দানিশ আলি নামের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, ওই রোগী হাসপাতালের ২ হাজার টাকার বিল মেটাননি। কর্মীরা সেই টাকা চাইলে তিনিই কর্মীদের উপর হামলা চালান।
এই পুরো ঘটনা রাস্তার ধারে থাকা একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, প্রথমে রোগী ও তাঁর আত্মীয়র সঙ্গে কথা কাটাকাটি হচ্ছে হাসপাতালের কর্মীদের। তারপর কর্মীরা হাসপাতালের ভিতরে গিয়ে আরও লোককে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে আসে। সবার হাতে লাঠি ছিল। তারপরেই বেধড়ক মারতে শুরু করে তারা। এই মারের চোটেই সুলতানের মৃত্যু হয়।
সুলতানের পরিবারের লোকেরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয় থানার এসআই ছোটে লাল জানিয়েছেন, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। পুরোটা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।