বিধানসভায় কি এবার ভার্চুয়াল অধিবেশন? প্রাথমিকভাবে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে সবটাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চূড়ান্ত সীলমোহরের অপেক্ষায়।
গত ফেব্রুয়ারিতে বাজেট পাসের পর দফতরওয়ারি বাজেট পেশ করতে শেষ অধিবেশন বসেছিল মার্চে। ততদিনে করোনা থাবা বসিয়েছে বিশ্বজুড়ে। সামাজিক দূরত্ববিধি লাগু হয় রাজ্য বিধানসভাতেও। দফতরওয়ারি অধিকাংশ বাজেট গিলোটিনে পাঠিয়ে দ্রুত শেষ করতে হয় অধিবেশন। নিয়ম অনুযায়ী, বাজেট পেশের ছ’মাসের মধ্যে আরও একদফা অধিবেশন বসিয়ে বরাদ্দ অর্থের কার্যকর ভূমিকায় নিশ্চিত করতে হয়। ঠিক এই কারণেই জরুরি ভিত্তিতে অধিবেশন বসাতে চাইছে সরকারপক্ষ।
অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে ভেবেছিলেন জোড়-বিজোড় সংখ্যা ধরে বিধায়কদের এনে অধিবেশন বসাতে। কিন্তু রাজ্যের কোভিড সংক্রমণ বাড়ায় সেই ভাবনা বাতিল করতে হয়। তার পরই ভার্চুয়াল অধিবেশনের দিকে ঝুঁকেছে সরকারপক্ষ। সবটাই এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চূড়ান্ত সীলমোহরের অপেক্ষায়। অবশ্য এক্ষেত্রে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যক্ষ বলেছেন, ‘এখনও দিনক্ষণ কিছু ঠিক হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী বললেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বিধানসভার সচিবালয় সূত্রের খবর, পুরসভার নানা কাজে অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন। নির্বাচনের আগে একাধিক প্রক্রিয়াগত দিক রয়েছে, যেগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে। তা ছাড়া গণপিটুনি রোধের জন্য আইন প্রণয়ন এখনও হয়নি। ঠিক এই কারণগুলির জন্যই অধিবেশন বসানো প্রয়োজন। তবে এই পরিস্থিতিতে যে জিনিসটা জরুরি, সেটা হল প্রযুক্তি। প্রত্যেক বিধায়ক, বিশেষ করে প্রান্তিক এলাকার বিধায়কের হাতে থাকতে হবে নিদেনপক্ষে ন্যূনতম প্রযুক্তির মানের একটি ল্যাপটপ, ট্যাব বা স্মার্টফোন। ২০১১সালে ক্ষমতায় আসার পরই সরকারের তরফে প্রত্যেক বিধায়ককে একটি করে ট্যাব দেওয়া হয়েছিল। অনেকেরই যদিও সেই ট্যাবের অবস্থা নানা কারণে শোচনীয়। ফলে একমাত্র বাধা হতে পারে এই কারণটি। যদিও ভার্চুয়াল অধিবেশনের প্রয়োজনে সেই খারাপ ট্যাব বদলেও দেওয়া হতে পারে বলে খবর। অধ্যক্ষও ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, প্রযুক্তিগত দিক থেকে বিধানসভা সবরকমভাবে তৈরি।
অন্যদিকে, চলতি মাসেই নানা স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারমানদের নিয়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অধ্যক্ষ। পরে সিদ্ধান্ত বদলে কমিটির চেয়ারম্যানদের ডেকে এনে তা বিধানসভাতেই করার কথা ভাবেন। কিন্তু সেই ভাবনা আপাতত বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ।