চীনের মত নেপালের সঙ্গেও সীমান্ত নিয়ে বিবাদের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে ভারতের। কিছুদিন ধরেই নেপাল ভারত বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। মানচিত্রে বদল এনে তাঁরা ভারতের তিনটি এলাকা নিজেদের বলে দাবি করছে। গত মাসেই এই নয়া মানচিত্র সংক্রান্ত বিলও সংসদে পাশ করিয়েছে ওলি সরকার। এরই মধ্যে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগ চাইলেন তাঁরই দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির একাধিক শীর্ষ নেতা। ভারত নিয়ে মন্তব্য করে নিজের দলেই চাপের মধ্যে পড়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অবস্থা এমনই স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে তাঁর পদত্যাগের জন্য সওয়াল করেছেন একাধিক নেতা।
মঙ্গলবার থেকে বালুওয়াটারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে শুরু হয়েছে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক। এই বৈঠক শুরু হতেই নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ‘প্রচণ্ড’ কটাক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন যে ভারত তাঁকে সরানোর জন্য ষড়যন্ত্র করছে, তা রাজনীতিগত ও কূটনৈতিক কোনও দিক দিয়েই ঠিক নয়। প্রধানমন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খারাপ করতে পারে। তাই তাঁর উচিত পদত্যাগ করা।’
প্রসঙ্গত, রবিবার ওলি মন্তব্য করেছিলেন, তাঁর সরকার নেপালের নতুন মানচিত্র প্রকাশ করার পর থেকেই তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। দূতাবাস থেকে শুরু করে হোটেল, তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আর সেই ষড়যন্ত্রে নেপালের অনেক নেতা যুক্ত রয়েছেন। এই প্রসঙ্গ তুলেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন প্রধানমন্ত্রী এভাবে প্রকাশ্যে এক প্রতিবেশী রাষ্ট্র ও নিজের দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে পারেন না। এতে তিনি দেশ ও দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন।
শুধু প্রচণ্ড নন, মাধব কুমার নেপাল, ঝালানাথ খানাল, ভাইস চেয়ারম্যান বামদেব গৌতম, মুখপাত্র নারায়ণকাজি শ্রেষ্ঠার মতো দলের প্রথম সারির নেতারাও প্রধানমন্ত্রী ওলির কাছে দাবি জানিয়েছেন, তিনি যে মন্তব্য করেছেন তার প্রমাণ দেখাতে হবে। যদি তা দেখাতে না পারেন তো পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এই নেতাদের মতে এই ধরনের অ-কূটনৈতিক ও অ-রাজনৈতিক মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী ওলির উচিত নিজে থেকেই পদত্যাগ করা।
যদিও ওই বৈঠকে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী ওলি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। অবশ্য এই প্রথম নয়। এর আগেও প্রধানমন্ত্রী ওলি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড। তিনি বহুবার অভিযোগ করেছেন, সরকারের সঙ্গে দলের কোনও যোগাযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী দলের সঙ্গে কোনও কথা না বলেই একাধিক সিদ্ধান্ত নেন বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।